হিউস্টনে চীনা দূতাবাস বন্ধের পর দু’দেশের মধ্যে জল গড়িয়েছে অনেক দূর, পরস্পরের গলাতেই চড়া সুর লক্ষ করা গেছে, এর মধ্যেই চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগ এনে আমেরিকায় গ্রেফতার হলো তিন চীনা নাগরিক। চতুর্থ জন পলাতক এবং আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা এফবিআই এর ধারণা এই চতুর্থ জন সানফ্রান্সিসকোর চিনা দূতাবাসে আশ্রয় নিয়ে আছে।
এই চীনা নাগরিকরা আমেরিকায় পড়ুয়া হিসেবে এসেছেন, বস্তুত আমেরিকায় প্রতি বছর নানা দেশ থেকে বহু শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং পড়ুয়া আসেন। তবে এফবিআইয়ের সিকিউরিটি ব্রাঞ্চের এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর এর মতে, দেশের উদারনীতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করার জন্য চিন এই অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে।
এফবিআই সূত্রের খবরে ধৃতদের বিরুদ্ধে ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং দোষী প্রমাণিত হলে ধৃতদের ১০ বছরের জেল এবং ২ লক্ষ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হবে। হোয়াইট হাউজ এর মতে পিপলস লিবারেশন আর্মির এই সদস্যরা নিজেদের পরিচয় গোপন করে রিসার্চ ভিসার জন্য আবেদন করেছিল এবং চীন ইচ্ছাকৃতভাবে আমেরিকার উদারীকরণের সুযোগ নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কব্জা করার চেষ্টা করছে।
অভিযুক্তদের একজন জিন ওয়াং ২০১৯ এর মার্চ মাসে আমেরিকায় আসেন এবং তার ভিসা অনুযায়ী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিজ্ঞান গবেষণার জন্য তিনি এসেছেন, কিন্তু জিনকে জেরা করা শুরু হলে এফবিআই জানতে পারে যে ২০০২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মি তে মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন, এর মধ্যে অনেক সময় বয়ান বদলও করেছে জিন। আমেরিকার কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রোডাকশন আধিকারিকদের জিন জানিয়েছেন যে তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মি তে মেজর পদে ছিলেন, কিন্তু তিনি এখন আর পিএলএ র সাথে জড়িত নয়, যেটি এফবিআই এর মত অনুযায়ী সম্পূর্ণ মিথ্যে।
অভিযুক্তদের মধ্যে বাকিরা হুয়ান টেন এবং চেন সং। প্রথমজন ২০১৯ এর অক্টোবরে এবং দ্বিতীয় জন এ বছরের ১৭ জুন আমেরিকায় আসেন। এফবিআই এর মতে এরা সকলেই কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এর উদ্দেশ্য এলেও এরা প্রথম থেকে নিজের পরিচয় গোপন করেন এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির সাথে নিজেদের আঁতাত সম্পূর্ণরূপে গোপন রেখে দেন।