পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্র। সুপ্রিমকোর্টের পক্ষ থেকে ট্রেনের ভাড়া কে দিচ্ছে, খাবারকে দিচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, রাজ্যে ফেরার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ইত্যাদি ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুশার মেহতা জানিয়েছেন এখনো অব্দি ৯১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন, এবং তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে রেল, তিনি আরো জানান পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা দূর করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। শুনানির পর বিচারপতি নির্দেশ দেন পরিচয় শ্রমিকদের কাছ থেকে ট্রেন ভাড়া ভাড়া কোনোভাবেই নেওয়া যাবে না এবং ব্যবস্থা করতে হবে খাওয়ারের।
পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কথা মাথায় রেখে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ বিষয়টি শুনানি করে আদালত এবং তারপরই সরকারকে একগুচ্ছ সওয়াল ছোড়া হয় ছোড়া হয়। বলাই বাহুল্য ভারতে বিগত ক’মাস ধরে পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে যে টানাপোড়েন চলছে তাতে দেখা গেছে খাদ্যাভাবের জন্য অনেক শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষ করে অর্থ এবং খাদ্যাভাবের জন্য যখন তারা বিভিন্ন শহর থেকে নিজেদের গ্রামের দিকে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করে তখনই সরকারের ব্যবস্থাপনার গলদের কথা সামনে আসা শুরু হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকায় হেঁটে ফেরা শ্রমিকদের থামিয়ে খাওয়ার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার মতো নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু করেছে কেন্দ্র এবং এখানেও বেশ কিছু গলদ ও দুর্দশার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে এবং ব্যক্তিগতভাবে ও একাধিক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দায়ের করা হয়। আসলো এবং খাদ্য নিশ্চিত করার দাবিতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন সমাজকর্মী মেধা পাটেকার, বস্তুত সেইসব মামলা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির জেরেই স্বতপ্রণোদিত হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের এই ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি অশোক ভুষণ, বিচারপতি এসকে কল এবং বিচারপতি এম আর শাহের বেঞ্চে। সরকারপক্ষের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কে সরকারি ব্যবস্থা নিয়ে অন্তত ৫০ টি প্রশ্ন করেন আদালত, তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ট্রেনের ভাড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে কিনা এই বিষয়টি, উত্তরে তুষার মেহেতা জানান পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না এবং তারা যে রাজ্যে ফিরছে সেই রাজ্য সরকার তাদের ট্রেনের ভাড়া দিচ্ছে এবং রাজ্যে ফেরার পর বাসে করে বাড়ি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছে।
খাবারের প্রশ্নে তুশার মেহতা জানান, যে রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরছেন ট্রেনে ওঠার আগেই রাজ্য সরকার তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করছেন এবং খাবার দিচ্ছে ভারতীয় রেল, রেলের হিসেবে এখন অব্দি মোট ৮৪ লক্ষ মিল দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরানো হচ্ছে এবং করোনাভাইরাস এর বিধি অনুযায়ী প্রাতিষ্ঠানিক বা হোম কোয়ারেন্টাইন এর বন্দোবস্ত করেছে রাজ্য সরকার গুলো।