নেই অ্যাম্বুলেন্স, হেঁটেই হাসপাতালে যেতে হল করোনা আক্রান্ত এক কলেজ ছাত্রকে

নেই অ্যাম্বুলেন্স, হেঁটেই হাসপাতালে যেতে হল করোনা আক্রান্ত এক কলেজ ছাত্রকে

নিজস্ব প্রতিবেদন, থানায় তিন ঘন্টার অপেক্ষা। বাধ্য হয়ে এমআর বাঙুর হাসপাতালের দিকে হাঁটতে শুরু করলেন করোনা রোগী। অবশেষে মাঝ পথে মিলল অ্যাম্বুলেন্স। করোনাতে আক্রান্ত বঙ্গবাসী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শাহ রেজা আলম-এর বাড়ি গড়ফারে। তিনি হাসপাতালে ভর্তির জন্য স্বাস্থ্য ভবনে যোগাযোগ করেন বলে তাঁর সহপাঠীর দাবি। সাড়া না পেয়ে যাদবপুর থানায় আসেন তিনি এবং তাঁর পরিচিত কিঙ্কিনী। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে অ্যাম্বুল্যান্সের অপেক্ষায় যাদবপুর থানার উল্টো দিকের ফুটপাতে বসে থাকার পর নিজেই হাঁটতে শুরু করেন। এই পরিস্থিতির জন্য ভাড়াবাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার ভয়ই দায়ী বলে জানালেন আক্রান্তের বান্ধবী।

কিঙ্কিনী জানান, সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ তাঁরা থানায় আসেন। সব কিছু বলার পরেও কোনও কাজ হয়নি। এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করতে হয়। শেষে বাধ্য হয়ে এমআর বাঙুরের দিকে হাঁটা শুরু করেন।তিনি বলেন, ‘’থানা থেকে সাউথ সিটি পর্যন্ত হেঁটে চলে গিয়েছিলেন। পরে আবার যাদবপুর মেইন হোস্টেলের সামনে চলে আসেন। রাত ১০.৩০ নাগাদ অ্যাম্বুলেন্স পান। তারপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ততক্ষণ রাস্তাতেই ছিলেন।’’

গত পাঁচ দিন ধরে জ্বর, গলা খুশখুশের উপসর্গে ভুগছেন ওই ছাত্র। বুধবার মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ দিন বিকালে রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। উপসর্গের মাত্রা শুনে আক্রান্তের ঠিকানায় অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানোর কথা বলে স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু পাড়ায় স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকলে তাঁকে বাড়ির মালিক বার করে দেবেন, এই আতঙ্কে আক্রান্ত স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়ে দেন, অ্যাম্বুল্যান্স আসার প্রয়োজন নেই। তিনি নিজেই বাঙুরে চলে যাবেন।

এদিন কিছু আগে গড়ফা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। কিন্তু লকডাউনের বাজারে কোনও গাড়ি না-পেয়ে হেঁটে যাদবপুর থানা পর্যন্ত যান। অভিযোগ, সন্ধ্যা সাতটা থেকে ঘণ্টা তিনেকের বেশি সময় আক্রান্ত থানার কাছে বসেছিলেন। আক্রান্তের বান্ধবী জানান, বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সাড়ে ছ’হাজার টাকা চাইছিল। অত টাকা তাঁদের কাছে ছিল না। পুলিশকে গাড়ির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। চিকিৎসকদের মতে, এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য রোগ গোপনের প্রবণতা বাড়ছে। আর তা সংক্রমণ বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠছে।

Leave a Comment