বিনামূল্যে যৌনকর্মীদের রেশন দেওয়ার মানবিক নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
নিজস্ব প্রতিবেদন, দেশের এই করোনা আবহে যৌনকর্মীদের রোজকার নেই। টাকার অভাবে দুর্দশার মধ্যে কাটছিল তাদের দিন। তাই তাদের বিনামূল্যে রেশন দেওয়া নিয়ে রাজ্যগুলির প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় অবিলম্বে তাঁদের কিছু দেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়টিও কেন্দ্রকে বিবেচনা করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। এবার শীর্ষ আদালত রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা শুকনো রেশন জোগাড় করে যৌনকর্মীদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়।রেশনকার্ড না থাকলেও তারা রেশন পাবে।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, রাজ্যগুলিকে এক মাসের মধ্যে National Aids Control Organization (NACO) ও জেলায় লিগাল সেলদের দ্বারা চিহ্নিত যৌনকর্মীদের শুকনো খাবার দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তি শুনানি ২৮ অক্টোবর। ওইদিন কতজন যৌন কর্মী সেখানে থাকে ও কতজনকে শুকনো রেশন দেওয়া হয়েছে এই ব্যাপারে একটি রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যগুলিকে জমা দিতে হবে সুপ্রিম কোর্টে। ন্যাকোর হিসেব থেকে জানা গেছে যে দেশে বর্তমানে ৮.৬৮ লাখ মহিলা যৌনকর্মী আছেন। এছাড়া যৌনকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রায় ৩৮ হাজার জন।
এদিন কর্নাটক, মহারাষ্ট্র ও বাংলা জানিয়েছে যে তারা ইতিমধ্যেই শুকনো রেশন দিচ্ছে। তবে রাজ্যগুলি বলে যে কেন্দ্রের থেকে অর্থ দরকার যাতে আর্থিক সাহায্য দেওয়া যায়। আবেদনকারীদের আইনজীবী একটি সমীক্ষার রিপোর্ট উল্লেখ করে জানান যে উজ্জ্বলা যোজনার সুযোগ পাচ্ছেন পাঁচটি রাজ্যে মাত্র আট শতাংশ যৌনকর্মী।শীর্ষ আদালত মঙ্গলবার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, প্রতিটি যৌনকর্মীকে বিনামূল্যে রেশন দিতে হবে।
রেশন দেওয়ার সময় তাদের পরিচয় পত্র দেখানোর জন্য কোনও রকম চাপ দেওয়া যাবে না। ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন স্বীকৃতি দিয়েছে এমন প্রতিটি যৌনকর্মীকে রেশন দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে, যৌনকর্মীদের মধ্যে অবিলম্বে শুকনো খাবার বিলি করতে হবে। কতজন যৌনকর্মী এই খাবার পেলেন সে ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে চার সপ্তাহের মধ্যে। বিচারপতির নাগেশ্বর রাও এবং অজয় রাস্তগীকে নিয়ে গঠিত দুই সদস্যের এক বেঞ্চ মঙ্গলবার এক নির্দেশে জানায়, আপাতত যৌনকর্মীদের শুকনো খাবার দেওয়া হোক। যৌনকর্মীদের হাতে নগদ টাকা দেওয়া যায় কিনা সে ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা চলছে বলে আদালত জানিয়েছে।