তৃতীয় দফার হিউম্যান ট্রায়ালের আগেই করোনার টিকা আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গোটা বিশ্বে এই নিয়ে হইচই হয়েছে অনেক। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সরাসরি রাশিয়ার বৈজ্ঞানিকদের সাথে কথা বললেও টিকা নিয়ে আলাদাভাবে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। টিকার গবেষণা সংক্রান্ত কোনো নথি এখনো অব্দি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর হাতে এসে পৌঁছায়নি। ইতিমধ্যেই আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ এই টিকার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে এমনকি রাশিয়ার অভ্যন্তরেও যথেষ্ট প্রতিবাদ হচ্ছে এই টিকা নিয়ে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সাথে যুক্ত থাকা রাশিয়ার ডাক্তার আলেকজান্ডার চুচুলীন ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন কিন্তু এত কিছুর পরেও পুতিনের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের জন্য সেপ্টেম্বরেই আসছে রাশিয়ার করোনার টিকা যার নাম দেওয়া হয়েছে স্পুটনিক ভি।
রাশিয়ার গামালিয়া ইনস্টিটিউট এবং রুশ স্বাস্থ্য দপ্তরের যৌথ প্রচেষ্টায় তৈরি হয়েছে এই টিকা। মাত্র দেড় মাসের মধ্যে এর প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়েল শেষ করা হয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের হিউমান ট্রায়ালের আগেই টিকার ঘোষণা করা হয়। গত বুধবার থেকে এই টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে কিন্তু ইতিমধ্যেই সেপ্টেম্বরে সর্ব সাধারণের কাছে টিকা আসার ঘোষণায় আবার প্রতিবাদের মুখে পড়তে হয় পুতিনকে। ডাক্তার আলেকজান্ডার চুচুলিন ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে এই টিকা তৈরীর ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ মানা হয়নি এমনকি সঠিকভাবে এর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়নি, আন্তর্জাতিক মহলে এই টিকার গবেষণা সংক্রান্ত কোনো নথিও উপলব্ধ করানো হয়নি কিন্তু তার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই টিকা সর্বসাধারণের জন্য বাজারে নিয়ে আসলে এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১৯৫৭-র রাশিয়ার প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহের নামে নামকরণ করা হয়েছে এই করোনার টিকার। মস্কোর ঘোষণার পর থেকেই এই টিকার বিরোধিতা করে আসছে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ কিন্তু মস্কোর অন্দরমহলে টিকা নিয়ে যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে তাতে মনে করা হচ্ছিল যে এর ফলে পুতিনের উপর চাপ বাড়বে, কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই তিনি সেপ্টেম্বরে টিকা আসার কথা দেশবাসীকে জানান। ভ্যাকসিনের ভরসা যোগ্যতা প্রমাণের জন্য এটির তৃতীয় দফার হিউমান ট্রায়ালের প্রথম ডোসটি নেন স্বয়ং ভ্লাদিমির পুতিনের মেয়ে।
তবে ইতিমধ্যে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু হয়েছে, এই নিয়ে গামালিয়া ইনস্টিটিউটের প্রধান আলেকজান্ডার গ্রিন্টসবার্গ জানান ” তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে, প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবককে প্রতিষেধকটির দুটি ডোস দেওয়া হবে, তবে তাদের হসপিটালে যেতে হবে না, বাড়িতে থেকেই এটা করা যাবে “।