আশার আলোয় অক্সফোর্ডের প্রতিষেধক

সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কোভিড -১৯ এর প্রতিষেধক তৈরীর লক্ষ্যে এগোচ্ছে অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউট। এখনো পর্যন্ত এক হাজার জনের ওপর প্রতিসেধকটি প্রয়োগ করা হয়েছে, ফলাফল বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে এবার অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি চায় এই প্রতিষেধকটি অনেক বেশি মানুষের উপর পরীক্ষা করতে। তাদের তৈরি এই প্রতিষেধকের প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষা শেষ হতেই বৃটেনের বিভিন্ন অংশ থেকে ১০ হাজার ২৬০ জন সহযোগীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৬ থেকে ৬৯ বছর বয়সীরাই বেশি এবং অল্পসংখ্যক এর বয়স ৭০ এর ও বেশি। প্রতিষেধকটির চূড়ান্ত সফলতা পরীক্ষা করার জন্যই এরকম ধরনের বয়সের মানুষদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তৃতীয় পর্যায়ে হবে ১৮ উর্ধদের উপর পরীক্ষা। এক্ষেত্রে সাবালকদের একটি অংশকে দেওয়া হবে ছাড়পত্র পাওয়া কোন প্রতিষেধক এবং অপর অংশ পাবে জেনার ইনস্টিটিউটের তৈরি প্রতিষেধক chAdOx1। উভয় দলের উপর তুলনামূলক পরীক্ষার পরই এই প্রতিষেধক এর কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করা সহজ হবে।

জেনার ইনস্টিটিউটের এই প্রতিষেধকটি তৈরি করা হয়েছে এডিনোভাইরাস থেকে যার থেকে শিম্পাঞ্জিদের সাধারণ সর্দি হয়, এটি মানুষের শরীরে জেনেটিক্যালি মডিফাইড উপায় ধোকানো হচ্ছে এবং শরীরে ঢোকামাত্রই এটি শরীরে স্পাইক প্রোটিন তৈরি করবে যা কিনা কোভিড -১৯ এর বৈশিষ্ট্য, এক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিনের সাথে লড়ার জন্য শরীরের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে এবং কোভিড -১৯ শরীরে আক্রমণ করার আগেই গড়ে উঠবে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের প্রধান, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড বলেন ” ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছে, আমরা দেখতে চাইছি বহুসংখ্যক মানুষের মধ্যে প্রতিষেধকটি কেমন কাজ করছে”।

এদিকে আমেরিকা জানিয়েছে পরীক্ষার গতি বাড়াতে ও দ্রুত প্রতিষেধক উৎপাদনের পথ সুগম করতে তারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২০ কোটি ডলার পর্যন্ত যোগাবে। উৎপাদনের বিষয় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে। ওষুধ তৈরি সংস্থা অস্ত্রাজেনেকা জানাচ্ছে দেড় বছরের মধ্যে তারা প্রতিষেধকের ১০০ কোটি ডোস তৈরি করতে সক্ষম।

প্রাণী ও মানবদেহ পরীক্ষার ফল সবে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে যদিও এ পর্যন্ত কিছুটা আশাব্যাঞ্জক ফল মিললেও দেখা গিয়েছে প্রতিষেধকটি ছটি বাঁদরকে নিউমোনিয়া থেকে রক্ষা করলেও, প্রতিশোধক পাওয়া এবং না পাওয়া দুদলের বাঁদরের নাকেই প্রায় সমসংখ্যক ভাইরাস বাসা বেঁধে রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের একদল বৈজ্ঞানিকের মতে এই প্রতিষেধকটির আয়ু হবে মাত্র ৬ মাস, অর্থাৎ শরীরে অ্যান্টিবডি কে সক্ষম রাখার জন্য এই প্রতিষেধকটি ছমাস ছাড়াছাড়া সকলকে নিতে হবে।

Leave a Comment