নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন কিছুদিন আগেই জানালেন যে তাদের দেশ করোনামুক্ত। যখন প্রথমবার করোনা নিউজিল্যান্ডে পৌঁছেছিল তখন জেসিন্ডা আরডার্ন এর হাত ধরেই সমস্ত নিয়ম মেনে রেকর্ড সময়ের মধ্যে করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। বিদেশ থেকে আসা এক জনের শরীরে করোনার জীবাণু মিললেও সেখান থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হননি বলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
দক্ষিণ গোলার্ধের এই দ্বীপটি করোনা মুক্তির জন্য অনেক বেশি কড়া আইন কানুনের পথে হেঁটেছে। চারিদিকে সমুদ্র পরিবেষ্টিত হওয়ার কারণে এই দেশে করোনা পৌঁছেছিল একটু দেরিতে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে রেকর্ড সময়ের মধ্যে করোনা মুক্তি ঘটিয়েছিল। ফলে অন্যান্য দেশ যখন করোনা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে তখন নিউজিল্যান্ড লকডাউন হাটিয়ে রীতিমতো স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরে এসেছে।
জনঘনত্ব অনেক কম নিউজিল্যান্ডে, বস্তুত সেই দিক থেকে একটু এগিয়ে ছিল দেশটি। তার সাথে দেশটির দৃঢ় স্বাস্থ্যব্যবস্থা, জনমানসে করোনার সচেতনতা এবং সুদৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেশটিকে করোনা মুক্তির পথে নিয়ে গেছে। নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রিসভার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে। সেই সঙ্গে মন্ত্রিসভা এবং দেশের মানুষের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের স্বচ্ছতা দেখিয়েছে সে দেশের মিডিয়া। প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন নিজে প্রতিদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে দেশের মানুষদের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করিয়েছেন।
দেশে লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব এবং করোনা সংক্রান্ত নিয়মাবলী পালনের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং যথাযথ যুক্তির মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে তা উপস্থাপন করা হয় সেই কারণেই যখন ইউরোপের প্রতিটি দেশ লকডাউন এর প্রতিবাদে মুখর তখন নিউজিল্যান্ড সবার থেকে একধাপ এগিয়ে করোনা মুক্তির পথে। প্রথম দফায় করোনা মুক্তিতে সাফল্য মিললেও আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সে দেশে আবার বেশকিছু সংক্রমণের খবর মেলে যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তারা সবাই বহিরাগত। এরপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয় এবং যথাযোগ্য নিয়মাবলী সঠিকরূপে পালনের ফলে আবার করোনা থেকে মুক্তি পায় নিউজিল্যান্ড। সেদেশের ইতিমধ্যেই স্কুল-কলেজ খুলে গিয়েছে। তবে বাস থেকে ট্রেন, মাস্ক না পড়লে কোথাও উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।