ডায়েট কাহারে কয়? সেকি কেবলি যাতনাময়?

আমি প্রচন্ড ফুডি। আমি নিজের কথাই বলছি, কলেজ ছাড়ার সময় ওজন ছিল ৬৫ কেজি আর তার পরের বছর সেটা বেড়ে হয় ৭৫। নতুন চাকরি – চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোরে। স্বাধীন জীবন আর প্রচন্ড ফাস্ট ফুড, এছাড়া মটন, চিকেন, পিৎজা এসব টো আছেই। প্রব্লেম টা বোঝা শুরু করলাম আজ থেকে ১ বছর আগে। এর মধ্যে জন্ডিস হয়েছে ২ বার। দৌড়োতে বা একটু খেলতেও হাফ ধরে, নতুন সংসার হয়েছে, একটা ছোট বাচ্ছা, ভবিষ্যত মাথায় রেখেই ভয় পেলাম, ওজন ততদিনে ৭৯। ঘরে জানালাম আমার চিন্তাটা, আমার বেটার হাফ সাজেস্ট করলো ইন্টারনেটের ডায়েট চার্ট, কিন্তু ভরসা হোলো না, এর মধ্যেই আবার জন্ডিস ধরা পড়লে ডাক্তার বললো ফুড হ্যাবিট চেঞ্জ করতে হবে আর কোনো এন্টিবায়োটিকস নয়।
ফুড হ্যাবিট চেঞ্জ – এর জন্য আমাকে কাউন্সেলিং করানোর পরামর্শ দিলেন ডাক্তার।

আমার আলাদা কোনো নেশা নেই, একমাত্র নেশা খাওয়া। আর এটা যেকোনো মাদক ছাড়ার থেকে কম শক্ত নয়। খিদে পেলে বা কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে আমার শরীর কাঁপতে থাকতো।

আবার বৌয়ের সাজেশনে গেলাম ডায়েট চার্ট বানাতে, তবে এবারে কোনো ইন্টারনেট থেকে নয়, এবারে গেলাম একজন নিউট্রিশনিস্ট এর কাছে, তিনি আমার সমস্ত প্রব্লেম শুনে আমার জন্য রেডি করেদিলেন ডায়েট চার্ট।
ফলো করলাম, ফল ও পেলাম, ২ মাসে কমলো ১০ কেজি, এখন আমার ওজন ৬৪। কিন্তু ডায়েট মানে কি? শুধুই ওজন কমানো নাকি আরো কোনো সংজ্ঞা আছে এর?

ডায়েট মানেই কি ওজন কমানো?

মোটেই না ! ডায়েট মানে আমার যতটা লাগবে ততটাই খাবো ওর বেশি না আবার কম ও না। ডায়েট মানে কিন্তু কম খাওয়ার নয়, দাঁড়িপাল্লা দিয়ে মেপে নির্দিষ্ট ক্যালোরি গ্রহণ করা। অনেকে ওজন কমানোর জন্য ডায়েট করে যেমন আমি, আবার অনেকে ওজন ধরে রাখার জন্য ডায়েট করে। এবার এর সাথে পেশী, হাড়ের ওজন সবকিছুই চলে আসে। এটা একটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং একদিনে ওজন কমে না এটা ধীরে ধীরে হয়।

বিএমআই ও বিএমআর

বেসাল মেটাবলিক রেট হোলো শরীর বিশ্রামে থাকলে যেটুকু ক্যালোরি লাগে আর বডি মাস ইনডেক্স হোলো উচ্চতা অনুযায়ী ওজন যেরকম হওয়া উচিৎ। অনেকে ফুড ক্যালোরি মাপার জন্য মোবাইল এপস ব্যবহার করছে কিন্তু এটা সঠিক পদ্ধতি নয়।

কি খাবো?

অনেকে নিজের ইচ্ছেমতো আলু, মুলো, চিনি এসব খাওয়া বন্ধ করে দেন, কিন্তু বিশ্বাস করুন আপনার শরীরের এসব কিছুই প্রয়োজন, আপনি ফল যেমন পরিমান মেপে খাবেন ঠিক সেরকম আলুও খেতে পারেন। নিজে থেকে কিছু মেপে খাবেন না, নিউট্রিশনিস্ট এর পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন এটি একটি ধীর পদ্ধতি, একটি বিজ্ঞানসম্মত উপায়, তাই আপনাকেও সাবধান হয়ে এই উপায় অবলম্বন করতে হবে।

Leave a Comment