তিনদিনের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার ‘মা’!

তিনদিনের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার ‘মা’!

নিজস্ব প্রতিবেদন, সন্তানের জন্য নিজের জীবন যে ‘মা’ রিস্কে ফেলে দেয়, সেই মা হঠাৎ হয়ে গেল নিজের সন্তানের খুনি। সাত মাস আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার রহস্যভেদ হতে সামনে এল এমনই এক আশ্চর্যজনক রিপোর্ট। তিনদিনের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে নিজে হাতে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল তাঁর নিজের ‘মা’। অবশেষে খুনের প্রায় সাত মাস পর নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের দায়ে আনন্দপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করল হত্যাকারী মা’কে।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতার আনন্দপুর থানা এলাকার নোনাডাঙ্গা আদর্শনগরের বাসিন্দা সোনিয়ার তিনদিনের কন্যা সন্তানের মৃত্যু হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করলে মা সোনিয়া পুলিশকে জানায়, ঘটনার দিনে মেয়েকে, ছেলের কাছে রেখে সে বাথরুমে গিয়েছিল। ফেরার পর ছেলে খেললেও তার কন্যা সন্তান নড়াচড়া করছিল না। শরীরও ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল শরীর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তৎক্ষণাৎ, কিন্তু ডাক্তার শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

অসুস্থতার কারণে মেয়ের মৃত্যু, এমনই দাবি করেন সোনিয়া। পরে ময়নাতদন্ত হলে প্রাথমিক রিপোর্টে সামনে আসে খুনের তত্ত্ব। কিন্তু মা তার কোলের সন্তানকে হত্যা করবে! এমনটা ভাবতে পারেনি পুলিশ। অপেক্ষায় ছিল চূড়ান্ত ময়না তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টের। অবশেষে জুলাই মাসের শেষে রিপোর্ট পুলিশের হাতে পৌঁছয়। ওই তিনদিনের সদ্যোজাতের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে সদ্যোজাতকে।তারপর থেকে শুরু হয় নতুন করে তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদ চলে সকলকে। সামনে আসে আসল ঘটনা, যে কন্যাসন্তানকে নিজে হাতে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুন করেছিল তার নিজের ‘মা’

এরপরই কেন নিজের সন্তানকে খুন করল মা? প্রশ্ন শুরু হয়। জেরা করার পর সোনিয়া পুলিশকে জানায়, সন্তানকে খুনের কারণ আর্থিক অনটন।পুলিশি জেরায় সোনিয়া জানায়, আর্থিক অনটনের কারণেই সন্তানকে মেরেছে সে। সে জানায়, “সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর থেকেই আমাকে দেখভাল করছিল না স্বামী। এমনকী, চিকিৎসার খরচও বহন করত না। তাই একটা সন্তান থাকার পর আরও একটি সন্তানকে কী খাওয়াব? কী করে মানুষ করব? সেই চিন্তার কারণেই খুন করেছি”। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত সোনিয়াকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

Leave a Comment