প্রয়াত ইরফান খান

যুদ্ধ চলছিল অনেকদিন ধরেই কিন্তু দেশবাসীকে কাঁদিয়ে শেষে ধরা দিলেন শেষ পরিণামের কাছে। প্রয়াত ইরফান খান, বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করলেন অভিনেতা, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৩ বছর।

মাত্র চার দিন আগেই মা কে হারিয়েছেন তিনি, শেষকৃত্যে যেতে পারেন নি। বেশ কয়েকবছর ধরেই মারণ রোগ ব্রেন ক্যান্সারে ভুগছিলেন, সুস্থ হয়ে করেন “আংরেজি মিডিয়াম “, কিন্তু মঙ্গলবার কোলন ইনফেকশন নিয়ে ভর্তি হন কোকিলাবেন হাসপাতালে। তাঁর পরিবারে স্ত্রী ও দুই ছেলে বলাই বাহুল্য ভেঙ্গে পড়েছেন।

অনুরাগীদের উদ্দেশ্যে কিছুদিনের আগেও টুইট করেন তিনি, তিনি লেখেন “জীবনে জয়ী হওয়ার সাধনায় মাঝে মধ্যে ভালবাসার গুরুত্ব ভুলে যাই আমরা। তবে দুর্বল সময় আমাদের তা মনে করিয়ে দেয়। জীবনের পরবর্তী ধাপে পা রাখার আগে তাই খানিক ক্ষণ থমকে দাঁড়াতে চাই আমি। অফুরন্ত ভালবাসা দেওয়ার জন্য এবং পাশে থাকার জন্য আপনাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আপনাদের এই ভালবাসাই আমার যন্ত্রণায় প্রলেপ দিয়েছে। তাই ফের আপনাদের কাছেই ফিরছি। অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সকলকে।”

১৯৬৭ র ৭ জানুয়ারি জয়পুরের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেন তিনি, ১৯৮৪ তে ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা থেকে স্কলারশিপ অর্জন করেন। এরপর একের পর এক সিরিয়াল এবং সিনেমা, ২০১১ তে পান পদ্মশ্রী, ২০১২ তে ” পান সিং তোমর ” এর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেতা, দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে “দা লাঞ্চ বক্স ” এর জন্য সেরা অভিনেতা। তিনি একমাত্র বলিউড শিল্পী যার দুটি ভিন্ন ছবি অস্কারে সম্মানিত।

বলিউডের আসরে গায়ের রং, সিক্স প্যাক এসব কিছুর উর্ধে যে অভিনয় সেটা তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। একের পর এক অন্য স্বাদের ছবি চরিত্র বদলে দেয় ভারতীয় সিনেমার, আর সেজন্যই বোধহয় হলিউডের একাধিক ছবিতে তিনি কাজ করেছেন।
তাঁর ৩৫ বছরের কর্মজীবনে জনগণকে উপহার দেন ৫০ টিরও বেশি ছবি। তাঁর অকাল প্রয়ানে দুঃখিত গোটা দুনিয়া। কোনো আলাদা মুখ নয়, ইরফান হয়তো আমাদের মধ্যে সিনেমার ওই চরিত্রগুলোর মধ্যেই বেঁচে থাকবে আর বার বার মনে করিয়ে দেবে তাঁর অসাধারণ স্থিতিশীল উপস্থাপনা।

Leave a Comment