লোকগান হলো বাংলার মাটির গান। লোকগানে মিশে আছে বাঙালির আবেগ, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, বিশ্বাস সবকিছু৷ আজ সেই ফোক-লোকগানের জনক লালন ফকিরের জন্মদিন। তিনি বাংলা তথা সমগ্র বিশ্বের একজন প্রতিভাবান শিল্পী। লালন ফকির কে আমরা লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন নামেও চিনি। তিনি একদিকে যেমন ছিলেন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক তেমনি অন্যদিকে তিনি ছিলেন মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক ও দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘বাউল-সম্রাট’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বাউল গান বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
লালন ফকিরের জন্ম কোথায় তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। তিনি নিজেও তা কখনো প্রকাশ করেন নি। কিছু সূত্রে পাওয়া যায় লালন ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে ১৭ই অক্টোবর তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশের) ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার হারিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কোনো কোনো লালন গবেষক মনে করেন, লালন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ভাড়ারা গ্রামে জন্মেছিলেন। এই মতের সাথেও অনেকে দ্বিমত পোষণ করেন। বাংলা ১৩৪৮ সালের আষাঢ় মাসে প্রকাশিত মাসিক মোহম্মদী পত্রিকায় এক প্রবন্ধে লালনের জন্ম যশোর জেলার ফুলবাড়ি গ্রামে বলে উল্লেখ করা হয়। ১৮৯০ সালের ১৭ই অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন।