১৯৮৪ ভূপাল গ্যাস দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিলো বিশাখাপত্তনম। এদিন সকালে বিশাখাপত্তনম শহরের দক্ষিণে অবস্থিত গোপালপত্তানাম এলাকায় এলজি পলিমার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামের ওই রাসায়নিক কারখানা থেকে লিক হয় বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস। ওই কারখানায় তৈরি হতো পলিয়েস্টার পলিথিন এবং সেই কাজেই ব্যবহৃত হতো স্টাইরিন নামের গ্যাসটি যেটি মানব শরীরের পক্ষে বিষাক্ত।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ওই কারখানা থেকে গ্যাস লিক হওয়া শুরু হয় মূলত সেই সময় কারখানায় ছিল শুধুমাত্র নিরাপত্তারক্ষীরা। কিন্তু সবাইকে সাবধান করার আগেই সেই গ্যাসের প্রভাবে তারা অচৈতন্য হয়ে পড়েন। এদিকে বেলা বাড়তে থাকলে সকাল সাড়ে চারটে নাগাদ গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায় ,আশেপাশের বাসিন্দাদের চোখ জ্বালা এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হতে থাকে যার জেরে ঘুম ভেঙে যায় অনেকেরই, পুলিশে খবর দেওয়া হয় এবং জরুরী ভিত্তিতে উদ্ধারকাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
কারখানা থেকে লিক হচ্ছে স্টাইরিন গ্যাস
এই ঘটনার জেরে প্রায় ১ হাজার জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কিং জর্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং এর মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক অফিসারের মতে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বজায় রেখে কাজ করার জন্য উদ্ধারকার্য চালাতে একটু দেরি হয়েছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের ডিজিপি ডিজি সায়ং বলেছেন ” এলাকা খালি করে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। দেশজুড়ে লকডাউনের জন্য বন্ধ ছিল ওই কারখানা”।
ঘটনার জেরে বলাইবাহুল্য আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। কারখানা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত স্টাইরিন গ্যাস। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে আশা ভিডিওগুলি তো দেখা যায় কিরকম ভাবে মানুষ রাস্তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী নেমেছে উদ্ধার কার্যে।
সংকটজনক অবস্থায় ভর্তি আছেন ৮০ জন যাদেরকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১১ হলেও মনে করা হচ্ছে যে সেটা বাড়তে পারে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি বলেন যে তিনি পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন, উনি এদিন কিং জর্জ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং অসুস্থ মানুষের খোঁজ খবর নেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সুপ্রিমো রাহুল গান্ধী ও নিজেদের সহমর্মিতার কথা টুইট করে জানিয়েছেন।