মারা গেলেন ‘দশ টাকার ডাক্তার’ নামে খ্যাত ডঃ রেড্ডি, কোভিড-১৯ থেকে সেরে লকডাউনেও রোগী দেখছিলেন ৮৪ বছরের এই ডাক্তার
নিজস্ব প্রতিবেদন, চলে গেলেন দক্ষিণ ভারতের ‘গড’ ডঃ সি মোহন রেড্ডি। হ্যাঁ, তিনি গরিবদের কাছে গড অর্থাৎ ভগবান স্বরূপ ছিলেন। চেন্নাইয়ের এই চিকিৎসকের পারিশ্রমিক ছিল মাত্র ১০০ টাকা। আর গরিব মানুষদের কাছে নিতেন মাত্র ১০ টাকা। তাই ‘দশ টাকার ডাক্তার’ বলেই খ্যাত ছিলেন তিনি। সকলেই তাঁকে এই নামেই চিনতেন। মানুষটা আর নেই। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কিছুদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তারপর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু হঠাৎ আবার তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। চিকিৎসা শুরু হলেও বাঁচানো যায়নি আর রেড্ডিকে।
১৯৩৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে জন্মগ্রহণ করেন ডঃ রেড্ডি। গুডুর অঞ্চলের একটি স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে স্নাতক হন কিলপুক মেডিক্যাল কলেজ থেকে। পড়াশোনা শেষে তিনি চলে আসেন তামিলনাড়ুতে। ভিল্লিভাক্কামে ‘মোহন নার্সিংহোম’ চালু করেন রেড্ডি। গরিবদের জন্য এই নার্সিংহোম তৈরী করেছিলেন। ৩০টি বেড নিয়ে চালু হয় এটি। শেষ জীবনেও তিনি শুধু গরিবদের কথা ভেবে গিয়েছেন। তিনি চলে গেলেও তাঁর কথা ভুলবেন না কেউ। গরিবদের জন্য তিনি তাঁর সারাটা জীবন দিয়ে এসেছেন। বিয়ে করেননি রেড্ডি। সারাক্ষন হাসপাতালেই থাকতেন। যখনই কেউ দরকারে আসতেন তিনি তাঁর চেকআপ করতেন।
ডঃ রেড্ডি, মনে হয় প্রথম ডাক্তার, যাঁর কোনও সময় করে বাধা নিয়ম ছিল না রোগী দেখার। বৃদ্ধ বয়সকে উপেক্ষা করে লকডাউনেও রোগী দেখেছেন তিনি। তাঁর ভাই ডঃ সিএমকে রেড্ডি জানান, “দাদা নিজে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যেতে পারেন, এই ভাবনাকে আমলই না দিয়ে রোগীদের জন্য লকডাউনেও চেম্বার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন”।গত ২৫ জুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ডঃ রেড্ডিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে আসেন। কিন্তু তারপরও কাটল না বিপদ। তিনি আজ না থাকলেও ভিল্লিভাক্কমের গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য ওঁনার অবদান কোনওদিন ভোলাবার নয়। ভিল্লিভাক্কমের বিধায়ক রঙ্গনাথন প্রয়াত চিকিৎসকের বাড়ি গিয়ে শ্রদ্ধা জানান।