হাথরাস ধর্ষণকাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল দেশ, দ্রুত তদন্তের নির্দেশ মোদির

হাথরাস ধর্ষণকাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল দেশ, দ্রুত তদন্তের নির্দেশ মোদির

নিজস্ব প্রতিবেদন, মনে করিয়ে দিল নির্ভয়াকাণ্ডের ভয়াবহ স্মৃতি, ধর্ষককারীদের সঠিক শাস্তির দাবিতে উত্তাল হাথরাস।এবার দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এ নিয়ে যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। যোগী রাজ্যে এরূপ ঘটনার পর চাপের মুখে উত্তরপ্রদেশ সরকারের।পাশাপাশি ওই যুবতীর মৃতদেহ সৎকার নিয়েও অভিযোগ তুলেছে মৃতার পরিবার। তাদের অভিযোগ, পরিবারের আবেদন অগ্রাহ্য করে মাঝরাতে জোর করে সৎকার করে দেওয়া হয়েছে দেহ।

অন্যদিকে, বুলগাড়ি গ্রামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, “কেউ ওই ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলতে চাইছে না। আমরা ভাবতেই পারিনি বিষয়টি এত গুরুত্ব পাবে। মেয়েটিকে যখন বড় হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হল, আমাদের আশা ছিল যে ও বেঁচে ফিরবে।” উচ্চ শ্রেণিভুক্ত ঠাকুর ও দলিতদের নিয়ে গড়া এই গ্রামে যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে, সে দিকে নজর রাখছে পুলিশ। পুলিশ জোর করেই গভীর রাতে কোনও মতে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে হাথরসের নিগৃহীতার। বাংবার অনুরোধ সত্ত্বেও দেহ শেষবারের মতো বাড়িতে আনার অনুমতি দেননি পুলিশ। ভেজা চোখে অভিযোগ করলেন হাথরসের দলিত নিগৃহীতা তরুণীর ভাই। কড়া পুলিশি ঘেরাটোপে মঙ্গলবার রাত তিনটের সময় তরুণীর শেষকৃত্য করা হয়।মৃতা দলিত তরুণীর ভাই পুলিশের বিরুদ্ধে জোর করে শেষকৃত্য সম্পাদনের অভিযোগ তোলেন।

পরিবারকে না জানিয়েই মাঝরাতে হাথরসের নির্যাতিতার মৃতদেহ সৎকার- ঘটনাটি তীব্র নিন্দা করছে সকলেই। গোটা ঘটনাটি গোড়া থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। হাথরাসের তরুণীর গণধর্ষণের দিন থেকে UP পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। গর্জে উঠেছে দেশ। এমনকি মঙ্গলবার গভীর রাতে পরিবারকে ঘরে আটকে রেখে মৃত তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ার পর উত্তরপ্রদেশ সরকার। যদিও হাথরসের মহকুমা শাসকের দাবি, পরিবারের সদস্যরা সেসময় উপস্থিত না থাকায়, পুলিশই মৃতদেহ সৎকার করে। ঘটনায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক বিজেপি।উত্তরপ্রদেশে গণধর্ষণে মৃত্যুর ঘটনায় যোগী আদিত্যনাথের ইস্তফার দাবি প্রিয়ঙ্কার।

কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ট্যুইট করে জানান, “হাথরসের নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পান। আমি তাঁকে কাঁদতে শুনেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, শুধুমাত্র সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার চান। গতকাল রাতে তাঁর মেয়েকে শেষবার বাড়িতে আনার চেষ্টা এবং সৎকারের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হল। যোগী আদিত্যনাথ পদত্যাগ করুন। নির্যাতিতা এবং তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার পরিবর্তে আপনার সরকার মৃত্যুর পরেও তাদের মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। আপনার মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই”।

উল্লেখ্য, ১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের সঙ্গে শস্যখেতে গিয়েছিল এই ১৯ বছরের তরুণী। সেখান থেকেই সে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে তাকে মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।তরুণীর জিভে ছিল গভীর ক্ষত ও গোটা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। দুষ্কৃতীরা তাঁকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টাও করেছিল। ঘটনার চারদিন পর গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত চারজন। প্রায় দু’সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর শেষমেশ হার মানল তরুণী। শোকে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। নিগৃহীতার বাড়িতে পাহারার বন্দোবস্ত করা হয়। গোটা গ্রামে টহল দিচ্ছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।মঙ্গলবার, দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে মারা যান নির্যাতিতা। রাত একটা নাগাদ গ্রামে পৌঁছয় নির্যাতিতার দেহ।

Leave a Comment