করোনা সংক্রমণ থেকে মোটামুটি সামলে উঠেছিল ইউরোপ। নিয়মানুবর্তিতা পালন, লকডাউন এবং সরকারী প্রচেষ্টায় গোটা ইউরোপে কমেছিল সংক্রমণ হার এবং স্বভাবতই মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক কম হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যের এহেন ক্ষয়ক্ষতি আর কতদিন? সেটা মনে করেই তুলে নেওয়া হয় লকডাউন। সংক্রমণ কম তাই মনেকরা হয় করোনা বোধহয় ইউরোপে এখন অস্তাচলের পথে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওরফে হু অনেকবার সাবধান করে ইউরোপকে কিন্তু পর্যটন স্থানগুলো, পাব, রেস্তোরাঁ এমনকি স্কুল ও খুলে দেওয়া হয়। আর এর পরেই আবার নতুন করে থাবা বসায় করোনা। সামনে আসছে হাড় হিম করা শীতকাল আর তখন সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেশি তাই ইউরোপের এই পরিস্থিতি যথেষ্ট পরিমাণে ভাবিয়ে তুলেছে হু কে।
পর্যটন শিল্পকে বাড়ানোর জন্য সমস্ত পর্যটনস্থল গুলোকে ইউরোপে খুলে রাখা হয়েছে, এমনকি ব্যবসায় জোয়ার আনতে হোটেল গুলোতে দেওয়া হচ্ছে ভারী ছাড়। ইতিমধ্যে ইউরোপের প্রতিটি পর্যটনস্থলে ভীড় উপচে পড়েছে। সামাজিক দূরত্ববিধি চুলোয় উঠেছে এমনকি বেশিরভাগই মাস্ক অব্দি পড়ছে না, তাই সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে।
এদিকে ইউরোপের পাব এবং রেস্তোরাঁর ভিড়ও উপচে পড়া। স্বভাবতই এতদিনের লকডাউনের পর নাগরিকরা এখন বেশ কিছুদিন ছুটির মেজাজে থাকতে চায় কিন্তু এর ফলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থনীতি চাঙ্গা করতে গিয়ে উল্টে করোনার বিপদ ডেকে আনছে ইউরোপের দেশ গুলি।
ব্রিটেনে ইতিমধ্যেই দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। স্কুল খোলা রাখার জন্য বাচ্চাদের মধ্যেও বাড়ছে সংক্রমণ সংখ্যা। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে সমগ্র ইউরোপ করোনা সংক্রান্ত মৃত্যুর হার ভারতের থেকে অনেক বেশি, যেখানে প্রতি ১০ লক্ষ মানুষে ভারতে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৩ সেখানে স্পেনে ৬৫২, ব্রিটেনে ৬১৪, ইতালিতে ৫৯১ এবং ফ্রান্সে ৪৭৯।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর ইউরোপ শাখার প্রমূখ হান্স ক্লুগ জানিয়েছেন ” একটু সেরে উঠতেই সমগ্র ইউরোপ করোনা সংক্রান্ত সমস্ত নিয়মাবলী জলাঞ্জলি দিয়েছে, এই অবস্থা ভবিষ্যতের জন্য প্রচন্ডভাবে ক্ষতিকর হতে পারে”। তার মতে গত মার্চে যখন করোনা তার সংক্রমনের শিখরে ছিল ইউরোপের দেশ গুলিতে তখনো এত বাজে অবস্থা দেখা যায়নি।