আজ মনস্তত্ব নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। মানুষের মনের এই বহুগামিতা কখনো কখনো খুব পীড়িত করে। দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দেয় মন এবং মাথার মধ্যে। প্রেম একবার হয় না বারবার সেই প্রশ্নে যাব না। সত্যি বলতে কোনটা প্রেম আর কোনটা একসাথে ভালো থাকার অঙ্গীকার, সেই প্রশ্নও বড়ই জটিল। এই প্রশ্নে হয়তো পরকীয়ার প্রসঙ্গ আসে। কিন্তু পরকীয়া কি? দুজনকে একসাথে ভালবাসা? বা দুজনকে একসাথে ভালো রাখা? তাই যদি হয় এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। এখানেও তো বিশুদ্ধ ভালোলাগা আছে। ভালোলাগার কি কোন সীমাবদ্ধতা বা দায়বদ্ধতা আছে? আমাদের কিছু দায়বদ্ধতা আছে, কিন্তু কার কাছে? আমার সঙ্গীর বা আমাদের কাছের মানুষ গুলোর কাছে না আমার নিজের বিবেক এর কাছে? এখন বিবেক কি? বেশ কয়েক বছর একসাথে একজন পুরুষের সাথে থাকার পরে অন্য কোন নতুন বা পুরনো প্রেম যদি মনে পড়ে, আবার একই সাথে যদি বর্তমান সঙ্গী আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়, এটা কি বিবেকহীনতার পরিচয়? যদি একলা সময়ে কখনো পুরনো প্রেম মনে পড়ে, শুধুই মনে পড়ে, কারন যা গেছে তা ফিরে পেতে চাই না আর যা পেয়েছি এবং আছে তাকে হারাতে চাই না। কিভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে মনের এই দ্বন্দ্ব কে? এর মধ্যে কি দোষের কি কিছু আছে? আমরা কেউ একলা সময়ে গান শুনতে বা গাইতে ভালবাসি। কিন্তু গান সবার জীবনের অংশ নয়। তা বলে কি বাকিরা গানের সাথে যুক্ত ভালোলাগাটা উপভোগ করে না? যদি এটা দোষের না হয়, একজন মানুষ কে মনে করা টা বা তার সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো মনে করা কেন অন্যায় হবে?
আমার সঙ্গীর সাথে আমার সম্পর্ক যদি ততটাই প্রয়োজনীয় হয় যতটা ঠিক আমাদের বাবা মায়ের সাথে আমাদের সম্পর্ক, সেখানে যতই পুরনো প্রেম মনে গুন গুন করুক না কেন, সঙ্গীর সাথে বিচ্ছেদ সম্ভব নয়। বাবা মায়ের সাথে কি আমাদের বিচ্ছেদ হয়? হয়তো মনোমালিন্য ঘটে, তাও কি একা থাকতে থাকতে কখনো একা সময়ে তাদের জন্য মন কাঁদে না? একজন স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের কাঁদে। বাবা মাকে ভালবাসতে যেমন কোনো শর্ত লাগে না, তেমনি যে সম্পর্ক শর্তহীন, সেখানে বিচ্ছেদ ঘটেনা। সেখানে প্রয়োজন নেই একসাথে থাকার, প্রয়োজন নেই দৈনন্দিন হিসেব কষার। ভালবাসতে শর্তের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু যখন ই যৌথতা র প্রসঙ্গ আসে, তখন ই আসে কিভাবে ভালথাকা যায়? আর তখন ই আসে কিছু শর্ত যা সাধারনত সমাজ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়। তাই মন খুলে ভালবাসুন, ভালরাখুন।