রাজধানী বেইরুট যেন মৃত্যুপুরী। গুড়িয়ে যাওয়া বহুতল, স্কুল, হাসপাতাল। দুমড়ে যাওয়া গাড়ি আর জলের পাইপ আর বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবায় অন্ধকার গোটা শহর। দেশের মানুষের অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ ডলার আর্থিক পরিষেবা বিভিন্ন দেশ পাঠালেও ক্ষতিগ্রস্তরা পাচ্ছে না কিছুই। আর তাই দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভের জেরে পদত্যাগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী মানাল আব্দেল সামাদ, তিনি লেবাননবাসীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তার ব্যার্থতার জন্য।
বহু মানুষ প্রায় রোজ পথে নামছেন লেবাননের ভ্রষ্ট সরকারকে পদত্যাগের দাবি তুলে। লেবাননের গির্জা মারেনাইট -এর প্রধান উপাচার্য বুট্রোস আল রাহিও বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে গলা মিলিয়েছেন।
৭০ লক্ষ্যের দেশ লেবানন ১০ হাজার কোটি ডলারের দেনায় ডুবে আছে। লেবাননের নাগরিকরা দেশের এই বেহাল অবস্থার জন্য সরাসরি সরকারকে দোষী করেছে, তাদের বক্তব্য সরকারি আমলাদের চুরি আর নিজেদের পকেট ভারী করার ফিকিরের জন্য আজ দেশের এই অবস্থা।
বেইরুট বিস্ফোরণের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত সপ্তাহে লেবানন সফরে যান ফ্রেঞ্চ প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরো, তিনি সাহায্যের আশ্বাস দেন গোটা লেবাননকে, তাকে ঘিরে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন অনেক মানুষ, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত লেবানন সরকার হটানোর জন্য ফরাসি সরকারকে অনুরোধ করেন। বিক্ষোভকারী জনতার উদ্দেশ্যে ম্যাকরো বলেন “ফরাসি সরকার নিশ্চিত করবে যে ত্রাণের সাহায্য যেন কোনো দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের হাতে না যায় “। তবে লেবাননের সরকার পতনের দাবি তুলেছে জার্মানি, আমেরিকা, ফ্রান্স সহ বহু দেশ। আপাতত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি বেইরুটে ত্রাণের কাজ সামলাচ্ছে। দুর্নীতি এড়াতে বহু দেশের আর্থিক সাহায্য সরাসরি দুর্গতদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে লেবানিজ রেড ক্রস অথবা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। তবে সরকারের উপযুক্ত ভূমিকার অভাব অনস্বীকার্য।