এখনো অনড় চীন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কি লাদাখে পিছু হটার লক্ষণ?

শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকে চীন ভারত সীমানা সংক্রান্ত হাতাহাতির পর্যালোচনায় বলেন “ওখানে আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে কেউ ঢোকেনি, আর অন্য কেউ ওখানে বসেও নেই “, এবং এই মন্তব্যের পর থেকেই বিরোধী সমেত গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে, যদি কেউ নাই থাকে তাহলে আমাদের কুড়ি জন সেনা শহীদ হলো কিভাবে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে প্রধানমন্ত্রীর অফিস নামলেও এর কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর গতকাল অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন যে যদি কোনো ঝামেলার কারণই না থাকবে, যদি চীনের সীমান্ত লঙ্ঘনের কোন ঘটনাই না ঘটে থাকে তাহলে মে মাসের শেষের দিক থেকে কি এমন ঝামেলা চলছে লাদাখে? কেনই বা চীনা বিদেশমন্ত্রী বারবার গলওয়ান উপত্যকা চীনের বলে দাবি করছেন? আমাদের কুড়ি জন সেনা কোথায় শহীদ হলেন, সেটা কি ভারতীয় সীমানার মধ্যে নাকি ভারতীয় সীমানার বাইরে?

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ও বিদেশমন্ত্রকের সাথে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের এই বিভেদে কার্যত হতাশা প্রকাশ করেন প্রাক্তন কূটনৈতিক এবং সেনা কর্তারাও। তাদের মতে গালওয়ান উপত্যকায় চিনা অনুপ্রবেশ নিয়ে ভারতের অবস্থান একেবারেই স্পষ্ট করেনি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, এবং এর কারণে চীনের সাথে সমস্ত দরকষাকষির রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এই অবস্থায় পিএমও অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর অফিস দাবি করেন ” অনেক বেশি পরিমাণে চিন সেনা গালওয়ান উপত্যকা’ দখল করতে এসেছিল কিন্তু ভারতের পরাক্রমি বিহার রেজিমেন্টের সাহসিকতার কারণে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়, কিছু দল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা তৈরি করছেন এবং এতে দেশের সেনা জওয়ানদের ভাবমূর্তির দিকে প্রশ্ন চিহ্ন চলে যাচ্ছে, আমাদের সেনাবাহিনীর সাহসিকতার কারণে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জেরেই প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে আমাদের দিকে কোন চিন সেনা নেই”।

তবে কূটনৈতিকভাবে ও প্রাক্তন সেনাদের অনেকাংশ ইতিমধ্যেই বলেছেন যে গত ৬০ বছরে ভারতের মূল ভূখণ্ডের

প্রায় ৪৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার অন্যদেশের হাতে চলে গিয়েছে, তবেকি প্রধানমন্ত্রীর লাদাখ বক্তব্য ভারতের মানচিত্র গঠন বদলের কারণ হয়ে দাঁড়াবে?

তবে পিএমও বিবৃতিতে দাবি করে ” ভারতের মূল ভূখণ্ডে ঠিক কতটা জায়গা আছে সেই সম্পর্কে ভারত সরকার অবগত, এবং বর্তমান সরকার সেটি রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ”।

Leave a Comment