সীমান্তে চিন ক্রমশ তার প্রভাব বিস্তার করছে, বলছে রিপোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদন, লাদাখ সীমান্তে ক্রমশ চিন তার শক্তি বাড়াচ্ছে। গত তিন বছরে সীমান্তে চিন তার শক্তি তিন গুন্ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য এখন ভারতের সঙ্গে এলএসি বরাবর এলাকাগুলি নিজেদের কব্জায় রাখা। কিন্তু ভারতও পুরোপুরি প্রস্তুত। এরআগেও চিনের ছক ভেস্তে দিয়েছে ভারত।
এলএসি বরাবর সংলগ্ন এলাকায় চিন কমপক্ষে ১৩টি নতুন সামরিক অবস্থান গড়ে তুলতে শুরু করেছে। তার মধ্যে তিনটি বায়ুসেনা ঘাঁটি, পাঁচটি স্থায়ী আকাশসীমা প্রতিরক্ষা কেন্দ্র এবং পাঁচটি হেলিপোর্ট রয়েছে।বেশ কিছু ছোটখাটো সংঘাতের পরে গত ১৫ জুন ভারত-চিন সংঘাতের জেরে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয় এবং চিনেরও অপ্রকাশিত পরিমাণ সৈন্য নিহত হয়। এর পরে দুই দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্রায় ৫০,০০০ অতিরিক্ত সেনা সমাগম ঘটায়। সীমান্ত দ্বন্দ্বের সমাধান খুঁজতে একাধিক সামরিক স্তরের বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় গত ২৯ ও ৩০ অগস্ট প্ররোচনামূলক সামরিক অভিযানে নামে চিন, যা দৃঢ় হাতে রুখে দেয় ভারতীয় সেনা।
চিন এখন চাইছে ভারতের সঙ্গে সমগ্র সীমান্ত অঞ্চলে বায়ুসেনা প্রয়োগে নিজের দক্ষতা জোরদার করতে। সাথে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক খুঁজে ভারতের উপর আক্রমণ করতে। ওপেন সোর্স স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, তিব্বতের মানস সরোবরের তীরে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরি করেছে চিন। ভূ-রাজনৈতিক সংক্রান্ত মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা স্ট্রাটফোর-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, লাদাখ সংঘাতের পরেই হেলিপোর্টগুলি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও রেডিয়ো সিগন্যাল, রাডার এবং উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে শত্রুপক্ষের অবস্থান নির্ধারণ করার জন্য রয়েছে ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্টেশন।
তাছাড়া, ডোকলাম ও সিকিম সেক্টরে বিতর্কিত সীমান্তের সংবেদনশীল প্রান্তকে ঢাকতে একই রকম তৎপরতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে আঞ্চলিক সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে, যাতে প্রতিপক্ষের আর্থিক দিকে তন্ পরে। রিপোর্ট স্পষ্ট বলছে, “চিনের নীতি হল, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়ে আঞ্চলিক বিরোধে ভারতকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলতে দ্বন্দ্ব-বিদ্ধস্ত সীমান্ত অঞ্চলে দ্রুত সেনাসমাগমের ব্যবস্থা করা।”
স্ট্রাটফোর-এরআন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি বিশেষজ্ঞ সিম ট্যাক জানিয়েছেন, “লাদাখে সংঘাত দানা বাঁধার আগে থেকে যে ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় সামরিক শক্তি বাড়াতে শুরু করে চিন, তাতেই বোঝা যায় যে এর পিছনে বড় ধরনের কোনও মতলব রয়েছে। আসলে এলএসি সংলগ্ন অঞ্চলগুলিকে নিজেদের কব্জায় আনতে চায় ওরা।”