কৃষি বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বাংলার চাষিদের
নিজস্ব প্রতিবেদন, দেশ জুড়ে কৃষক বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে বাংলাতেও। ময়দানে নেমেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে শাসক দল।প্রতিবাদরত কৃষকরা শুক্রবার সকালে দিল্লি-অমৃতসর হাইওয়ে কৃষিবিলের বিরুদ্ধে অবরোধ করেন।এবার কৃষি বিলের প্রতিবাদে শুক্রবার ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছে দেশের অধিকাংশ কৃষক সংগঠন।এই বন্ধের সমর্থনে পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে পথ অবরোধ।স্বাভাবিক ভাবেই মনে করা হচ্ছে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলের সমর্থন পাবে এই বনধ। আপাতত জানা যাচ্ছে, বনধ সফল করতে ৩১ টি কৃষক সংগঠন হাত মিলিয়েছে।
কৃষি বিলের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেসও। কৃষি বিলের বিরুদ্ধে ২ কোটি স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান শুরু করেছে তারা। যুব কংগ্রেস দেশের নানা স্থানে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেসের মুখপাত্র অভিষেক সিংভি মোদি সরকারকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বিলের ব্যাপারে সকলকে ভুল বুঝিয়েছেন। তাঁর দাবি, এই বিলের ফলে দেশের কৃষক শ্রেণি কর্পোরেট দাসত্বের শিকার হবে।পঞ্জাবে ইতমধ্যেই তিনদিনের রেল রোকো কর্মসুচি শুরু করেছেন কৃষকরা। দাবি মানা না-হলে তাঁরা ১ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল রোকো কর্মসুচি নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।
পাশাপাশি অযোধ্যা-লখনউ হাইওয়েতে প্রবল যানজটের খবর মিলেছে। সাথে পঞ্জাব ও হরিয়ানাতেও চলছে ধর্মঘট। সেখানে কৃষকদের সমর্থনে রয়েছে শাসক কংগ্রেস, বিরোধী আম আদমি পার্টি এবং NDA-এর শরিক SAD। বিল পাশের সময় ৮ বিরোধী সাংসদের বিরুদ্ধে উচ্চকক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছিল। সোমবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু তাঁদের সাসপেন্ড করেন। কেবল রাজ্যসভা নয়, সারা দেশেই কৃষকরা শুরু করেছেন প্রতিবাদ আন্দোলন।
আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব ট্র্যাক্টর মিছিলে অংশ নিয়ে বলেন, “সরকার তাদের তহবিলদাতাদের মাধ্যমে আমাদের অন্নদাতাদের পুতুলে পরিবর্তন করেছে। সরকার বলেছে ২০২২–এর মধ্যে কৃষকদের রোজগার দ্বিগুণ হয়ে যাবে কিন্তু এই বিল তাঁদের আরও গরিব করবে। কৃষি ক্ষেত্রকে কর্পোরেট ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে।” পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কৃষক সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেছে। মেয়ো রোডে ধরনা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে কৃষি বিলের সপক্ষে কৃষকদের নিয়ে জেলায় জেলায় মিছিল করার পরিকল্পনা নিয়েছে গেরুয়া শিবির। বৈঠক হবে কৃষকদের বাড়ি গিয়েও। তাঁদের বোঝানো হবে, এই বিল থেকে লাভবান হবেন কৃষকরাই।
ফিরোজপুর ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজেশ আগরওয়াল জানান, কৃষকদের রেল রোকো কর্মসুচি থাকায় সব স্পেশ্যাল ট্রেন তিন দিন বাতিল করা হয়েছে। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানান, “আমাদের সম্পত্তি রক্ষার জন্য এবং যাত্রীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে এই তিনদিন ফিরোজপুর ডিভিশন দিয়ে চলা সব যাত্রীবাহী ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৬ টা থেকেই এই নির্দেশ কার্যকরী হবে। পরিস্থিতি বুঝে মালগাড়ির গতিবিধি ঠিক করা হবে।”