পেঁপের গুণাগুণ

করোনা পরিস্থিতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইমিউনিটি। তাই ইমিউনিটি বাড়াতে ভিড় বেড়েছে ফলের দোকানে। দামও বেড়েছে চড়া হারে। ছোট থেকে বড়ো সকলেরই অন্যতম প্রিয় ফল পাকা পেঁপে। এটি একটি অন্যতম মিষ্টি ফল। পুষ্টিগুণের বিচারেও অন্য ফলের থেকে অনেকটাই এগিয়ে পেঁপে। তাই একে পাওয়ার ফ্রুট-ও বলা হয়ে থাকে। অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন এই ফলটি খুবই সহজলভ্য, তেমন পাওয়াও যায় কম দামে।

পেঁপে কে কাঁচা,পাকা দুই ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপে সবজি হিসাবে খাওয়া যায়। স্যালাড ও তরকারি করে খাওয়া যায়। অন্যদিকে কাঁচা পেঁপে মিষ্টি, সুস্বাদু ফল ফিসাবে খাওয়া হয়। নানা পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফলটি সম্পর্কে জেনে নিন বিস্তারিত ভাবে।

১. পেঁপে তে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ও সি থাকে। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে উপস্থিত  ভিটামিন সি ত্বক, চুল ভালো রাখে। দাঁতের মাড়ি রক্ষা করে। ভিটামিন-এ চোখের জন্য উপকারী।
২. ওজন কমাতে ডায়েটে রাখুন পেঁপে।
কারণ পেঁপে তে ক্যালরি কম থাকে কিন্তু ফাইবার বেশী যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৩. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে পেঁপের সমকক্ষ কিছু নেই। কারণ পেঁপে তে কোন কোলেস্টেরল নেই। বরং এতে উপস্থিত ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ধমনীতে কোলেস্টেরল জমতে বাধা দেয়।
৪. পেঁপে তে প্রচুর পরিমানে এনজাইম থাকে যা হজমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও জলে দ্রবীভূত ফাইবার থাক্র। যারা প্রতিনিয়ত হজমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের খাদ্য তালিকায় পেঁপের ভূমিকা অপরিসীম।
৫. পেঁপে ত্বকের জন্য খুব উপকারী।  ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে , একজিমা রোধে, এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা রোখে পেঁপের ভূমিকা অনেক।
৬. চিনির পরিমান কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগী রা নিশ্চিন্তে এই ফল খান। যাদের ডায়াবেটিস নেই তারাও খান কারণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৭. যেসব নারীর অনিয়মিত রজঃস্রাব হয়, তাদের জন্য পেঁপের জুস উপকারি। এক্ষেত্রে কাঁচা বা পাকা পেঁপে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। যেহেতু এই ফল শরীর উত্তপ্ত করে, তাই এটি ‘হট ফুড’ হিসেবেও স্বীকৃত।
৮. পেঁপেতে প্রচুর ভিটামিন ই, সি ও ফলেট থাকায় মল ত্যাগে সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এই ফল। কাঁচা পেঁপে ও তার রস হজমে সহায়তা করে। পেঁপেতে থাকা আঁশ বাওয়েল মুভমেন্ট স্বাভাবিক রাখে। এতে করে মল ত্যাগের সমস্যা দূর হয়।
৯. পেঁপেতে থাকা কাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন এনজাইম শরীরের যন্ত্রণা সারাতে সাহায্য করে। শরীরের কোথাও পুড়ে গেলে পেঁপের নির্যাস ব্যবহার করে স্বস্তি পাবেন।
১০. পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং কপার রয়েছে, নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার ফলে শরীরে ক্যালসিয়াম তৈরি হয় যা হাড় মজবুত করে। তাছাড়া আর্থারাইটিস, অস্টিও আর্থারাইটিস দূর করতে সাহায্য করে পেঁপে।
১১. পেঁপে ক্যান্সার নিরাময়েও ভূমিকা রাখে, পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফ্ল্যাভোনোক্সিড যা দেহে ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে বাঁধা দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে পেঁপের বিটা কেরোটিন উপাদান কোলন ক্যান্সার, প্রোসটেট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

তাছাড়া শ্বাস- প্রশ্বাসের আরোগ্য ক্ষেত্রে পেঁপের ভূমিকা অনেক। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার ফলে শ্বাস- প্রশ্বাসের সমস্যা কমে যায়। দাঁতের যন্ত্রণার অব্যর্থ ওষুধ হল পেঁপে। অন্ত্রের কৃমি রোধ করে পেঁপে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা পাকা পেঁপের বদলে কাঁচা পেঁপে খান। কারণ পাকা পেঁপে খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।

Leave a Comment