একসময়ের বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি অনিল অম্বানী গয়না বেচে আইনি খরচ মেটাচ্ছেন

একসময়ের বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি অনিল অম্বানী গয়না বেচে আইনি খরচ মেটাচ্ছেন

নিজস্ব প্রতিবেদন, একসময় বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি ছিলেন মুকেশ অম্বানীর ভাই অনিল অম্বানী। কিন্তু এখন তিনি দেউলিয়া। প্রায় ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকার ঋণ। চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংক চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্সিয়াল ব্যাংক অব চায়না এবং এক্সিম ব্যাংক অব চায়না একই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ভারতের আদালতে অনিলের বিরুদ্ধে মামলা করে।চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে গয়না বিক্রি করে ৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা অনিল অম্বানী জোগাড় করেছেন।এখন তিনি কার্যত দৈউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে।ব্রিটেনের এক আদালতে অনিল অম্বানী দাবি করেছেন, তিনি এখন গয়না বিক্রি করে মামলার খরচ জোগাচ্ছেন। তিনি আরও দাবি করেছেন, সংবাদ মাধ্যমে তাঁর জীবন যাপন নিয়ে যা প্রকাশ করা হয় তার সবটাই মিথ্যে। তিনি এখন একজন সাধারণ মানুূষের মতো জীবন কাটান। তাঁর চাহিদাও সামান্য।

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ২০০২ সালে ধীরুভাই অম্বানীর মৃত্যুর পর তাঁর বিশাল বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য দুই ছেলে মুকেশ অম্বানী ও অনিল অম্বানীর মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। মুকেশ অম্বানীর ভাগে গিয়েছিল রিলায়্যান্স ইন্ড্রাস্ট্রিজ ও পেট্রোকেম।অনিল অম্বানী পেয়েছিলেন টেলিকম, ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, পরিকাঠামোগত ব্যবসা।২০০৮ সালে অনিল বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি ছিলেন আর ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় মুকেশ ছিলেন পঞ্চম স্থানে।আর এরপরই ধীরে ধীরে লোকসানের পথে হাঁটতে শুরু করে অনিল আম্বানির ব্যবসা। ধীরে ধীরে আম্বানির ব্যবসায় ক্ষতি হতে থাকায় উক্ত ব্যাংকগুলির ঋণ তিনি মেটাতে পারেননি। বাধ্য হয়ে ব্যাংকগুলি একই সঙ্গে ব্রিটেন এবং ভারতের আদালতে অনিলের বিরুদ্ধে মামলা করে। ব্রিটেনের সেই আদালত আম্বানিকে চিনের তিনটি ব্যাংকের প্রায় ৫ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ঋণ শোধ করার নির্দেশ দিয়েছে।

অনিল অম্বানীর তরফে অনিলের মুখপাত্র জানান যে, অনিল আম্বানির স্পোর্টস কারের বিষয়ে গুজব রটিয়েছে সংবাদমাধ্যম। তাঁর মুখপাত্র আরও জানান, “৬১ বছরের অনিল আম্বানি আধ্যাত্মিক জীবনযাপনের পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেও ভালোবাসেন। মদ্যপান বা ধূমপান থেকে সর্বদা দূরে থেকে সর্বদা সুস্থ জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত তিনি। বিলাসবহুল জীবনযাপন না করে নানাবিধ শরীরচর্চায় নিজেকে সবল রাখেন তিনি।” রিলায়্যান্স টেলিকমের কর্নধার জানিয়েছেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে গয়না বিক্রি করে ৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা অনিল অম্বানী জোগাড় করেছেন।এখন তাঁর কাছে তেমন কিছুই নেই। তাঁর কাছে কোনও রোলস-রয়েস না এই, সাধারণ একটি গাড়ি আছে। গত ফেব্রুয়ারিতেই অনিল আদালতে জানিয়েছিলেন, তিনি কার্যত দেউলিয়া। ওই মামলার ভার্চুয়াল শুনানিতে তিনি বলেছেন, “আমার খরচ খুবই কম। আমার স্ত্রী-পরিবার সেই খরচ বহন করেন। আমার অন্য কোনও উপার্জন নেই। গয়না বিক্রয় করে আইনি খরচ মিটিয়েছি এবং, যদি আমাকে আরও খরচ মেটাতে হয়, (এটি) অন্য সম্পত্তি বিক্রির জন্য আদালতের অনুমতি নিতে হবে।”

Leave a Comment