মহাকাশ সেই আদিকাল থেকেই মানুষকে ভাবিয়েছে। বিশাল কৃষ্ণকায় বুকে অগুন্তি তারা দেখে আদিমকালে মানুষ ভাবতো সে বুঝি এক অন্য জগৎ। কিন্তু বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে মানুষ পাড়ি দেয় মহাকাশে, আর তারপর সেখান থেকেই হাজারো আবিষ্কারের পর আস্তে আস্তে মানুষের জানা শুরু হয় মহাবিশ্বকে।
ব্ল্যাকহোল কে মহাকাশের কৃষ্ণকায় গহবর বলা চলে। ব্ল্যাকহোল নিজের শক্তিতে সমস্ত কিছু নিজের দিকে আকর্ষণ করে নেয়, এর থেকে আলো পর্যন্ত বিচ্ছুরিত হয় না। ব্ল্যাকহোলের গঠন নিয়ে গবেষণা করে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেলেন রজার পেনরোজ। প্রত্যেকটি ছায়াপথের কেন্দ্রে একটি অতি ভারী বস্তুর সন্ধান দিয়ে রজারের সাথে এই পুরস্কার জিতে নিলেন আরো দুই বৈজ্ঞানিক, জার্মানির রেইনহার্ড গেঞ্জেল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহিলা বৈজ্ঞানিক আন্দ্রেয়া ঘেজ। আন্দ্রিয়া এমন চতুর্থ মহিলা বিজ্ঞানী যিনি পদার্থবিদ্যায় নোবেল পেলেন। পুরস্কারের দ্বারা প্রাপ্ত মোট অর্থের অর্ধেক পাবেন রজার এবং বাকি অর্ধেক রেইনহার্ড এবং আন্ড্রেয়ার মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রজার পেনরোজ মূলত ব্ল্যাকহোলের গঠন নিয়ে গবেষণা করেন এবং প্রমাণ করেন যে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ সূত্রের উপর ভিত্তি করে ব্ল্যাকহোলের জন্ম হওয়া সম্ভব।
রেইনহার্ড এবং আন্দ্রেয়া, জার্মানির ম্যাক্সপ্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট অফ এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল ফিজিক্সের অধিকর্তা। তারা যুগ্ম গবেষণায় প্রমাণ করেন যে প্রত্যেকটি ছায়াপথের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি অতীব ভারী বস্তু রয়েছে এবং এই বস্তুটি নিজের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ছায়াপথে উপস্থিত সমস্ত গ্রহ এবং তারার কক্ষপথ নির্ধারণ করে। এই অতীব ভারী বস্তুটি একটি ব্ল্যাকহোল ছাড়া আর কিছুই নয় যার ওজন সূর্যের থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ গুণ বেশি।
বস্তুত একটি বিশালাকায় তারা যখন তার জ্বলন শক্তি হারায় তখন নিজের কেন্দ্রের মাধ্যাকর্ষণ এর প্রভাবে তারাটি কেন্দ্রবিন্দুর দিকে ধসে যায় এবং প্রচণ্ড ঘূর্ণনের প্রভাবে তীব্রভাবে শক্তি বিচ্ছুরিত করতে থাকে এবং একটি ব্ল্যাকহোলে পরিণত হয়। মহাবিশ্ব উদ্ভাবনের বিগ ব্যাং থিওরি অনেকটা এটির উপরেই নির্ভরশীল।