স্তনের ক্যানসার সারাতে সক্ষম রক্তচন্দন গাছের বীজ, দাবি গবেষকদের
নিজস্ব প্রতিবেদন, দেশে মহিলাদের স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা বেশ বেড়েছে। ভারতে সবচেয়ে বেশি মহিলারা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এবার মগধ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বিবেক আখৌরি দাবি করেছেন, রক্তচন্দন গাছের বীজে রয়েছে স্তন ক্যানসার রোধের উপাদান। ২৯ বছরের এই গবেষক বিশেষ প্রজাতির ইঁদুরের উপরে করা পরীক্ষা সফল হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। ইনি বায়োটেকনোলজির স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ছাত্র।
যদিও এর আগেও রক্তচন্দন গাছের গুঁড়ির কেন্দ্রীয় অংশে ক্যানসার দমনের উপাদান সম্পর্কে প্রমাণ মিলেছিল পরীক্ষাগারের গবেষণায়। তবে এই প্রথম কোনও প্রাণীর উপরে এই গবেষণা সফল হল বলে জানা গিয়েছে। গত অগস্ট মাসে আমেরিকার বিজ্ঞান, ওষুধ, কলা ও অন্যান্য জ্ঞানচর্চা বিষয়ক জার্নালে বিবেক আখৌরির গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে ‘সেজ পাবলিশিং’ সংস্থা।
আখৌরি জানান, “ইঁদুরের দেহে ক্যানসার কোষ প্রবেশ করানোর পরে যে টিউমার তৈরি হয়েছিল, পাঁচ সপ্তাহ ধরে দৈনিক একবার করে রক্তচন্দন গাছের বীজ খাওয়ানোর পরে টিউমারের আকার ৪৯.৫% হ্রাস পেতে দেখা গিয়েছে। ওই বীজ বক্সার জেলার সিমরি গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। পাশাপাশি যে ইঁদুরদের ওই বীজ খাওয়ানো হয়নি, তারা পাঁচ সপ্তাহ পর থেকে মরতে থাকে।”
বীজের সঠিক ক্ষমতা, ক্যানসার চিকিৎসায় তার প্রয়োজনীয়তা, এই চিকিৎসার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না, তা সঠিক জানতে এখনও গবেষণা চলছে। অন্যদিকে ক্যানসারজনিত টিউমারের আকার ছোট করতে তামিল নাডু, শ্রী লঙ্কা ও ব্যাঙ্ককে সহজলভ্য ‘বেল’ ফলের গুরুত্ব বিচারে গবেষণা করছেন আখৌরি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে তাইওয়ানে অধ্যাপক উ্য ও সহ-গবেষকদের পরীক্ষাতেও দেখা গিয়েছিল, রক্তচন্দন গাছের কেন্দ্রীয় অংশে উপস্থিত উপাদানের সাহায্যে লিভার ও স্তনের ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এরপর ২০১৮ সালে চিনের অধ্যাপক লি ও তাঁর সহ-গবেষকদের গবেষণায় ফের প্রমাণিত হল রক্তচন্দন গাছের গুঁড়ির অভ্যন্তর কাজে লাগিয়ে ক্যানসার উপশম সক্ষম। সহ- গবেষকদের মধ্যে একজন জানান, “চিনের ওই গবেষণায় জানা গিয়েছিল রক্তচন্দন গাছের কেন্দ্রীয় অংশ এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্টি ক্যানসার কোষের আকার ছোট করতে সহায়ক হয়। এই সাফল্য দেখা গিয়েছে বিশেষত লিভার, স্তন ও মহিলাদের যৌনাঙ্গের ক্যানসারে।”