গত ১১ ই আগস্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশবাসী তথা সমগ্র বিশ্বের সামনে নিয়ে এসেছিল করোনার একমাত্র সমাধান, রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি। ১৯৫৭ সালের রাশিয়ার নির্মিত প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক যেমন গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছিল, এই করোনার ভ্যাকসিনও ঠিক তাই করবে সেজন্যই নামকরণে সামঞ্জস্য রাখা হয়। কিন্তু এই ভ্যাকসিন বাজারে আসার পর ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সহ বিশ্বের অনেক বিশেষজ্ঞ জানায় যে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা মোটেই সুবিধের নয় কারণ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তৃতীয় ধাপ এখনো পরীক্ষায় বাকি রয়েছে স্পুটনিকের। অবশ্য বিশ্বের অতশত কথায় কর্ণপাত করেননি প্রেসিডেন্ট পুতিন। প্রথম ভ্যাকসিনটি নিয়েছে তার মেয়ে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি জনসাধারণের জন্য চলে আসবে ভ্যাকসিনটি, ইতিমধ্যেই উচ্চপদের বেশ কয়েকজন সরকারি আমলা এই ভ্যাকসিনটি নিয়েছেন। সমস্ত রকম বিতর্ক উপেক্ষা করেই ভ্যাকসিনটি নিলেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগু এবং পরক্ষণেই জানালেন যে তিনি ভালো আছে। ইতিমধ্যে ভ্লাদিমির পুতিন ও জানিয়েছেন যে ভ্যাকসিন নেওয়ার এতদিন পরেও তার মেয়ে ভালো আছে এবং এখনও অবধি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
রাশিয়ার ছাড়পত্র দেওয়ার আগেই কিন্তু চিন তার নিজের করোনার ভ্যাকসিন দেশের মানুষকে দেওয়া শুরু করে দিয়েছিল। তবে এই সপ্তাহের শুরুতে এই প্রথমবার চীন নিজের ভ্যাকসিনটি জনসমক্ষে হাজির করল। সিনোভ্যাক বায়টেক এবং সিনোফার্ম নামের দুটি চীনা সংস্থা এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। তাদের গবেষণা অনেকদিন আগে শুরু হলেও গোটা ব্যাপারটা প্রথম থেকে গোপন করে গেছিল তারা, তবে এর প্রয়োগ শুরু হয়ে গেলেও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা টি এখনো অবধি কিন্তু সফলভাবে উত্তীর্ণ করেনি এই ভ্যাকসিন। সরকারি ছাড়পত্র পেলেও এখনো অবধি বাজারে আসেনি। বেইজিংয়ের বাণিজ্য মেলায় সম্প্রতি সিনোভ্যাক এবং সিনোফার্মের স্টলে এই ভ্যাকসিনের ভাইল প্রদর্শন করানো হয় এবং এটিকে দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। সিনোভ্যাক এর প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে তারা ইতিমধ্যেই এমন একটি কারখানা প্রস্তুত করে ফেলেছেন যাতে এই ভ্যাকসিনের অন্তত ৩০ কোটি ডোস এক বছরে তৈরী করা যায়। ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পূর্ণ হলে তবেই বাজারে আসবে ভ্যাকসিনটি। প্রস্তুতকারকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করার জন্য জোর কদমে প্রস্তুতি চলছে।