মানবদেহের মধ্যেই রয়েছে করোনা প্রতিরোধক টি-সেল, দাবি গবেষকদের

মানবদেহের মধ্যেই রয়েছে করোনা প্রতিরোধক টি-সেল, দাবি গবেষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদন, গোটা বিশ্ব এখন লেগে পড়েছে করোনা প্রতিরোধক আবিষ্কারের তাগিদে। শুধু যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলেই হবে, তা না! সাথে মাথায় রাখতে হবে মানবদেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতার পুরো বিষয়টি। দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, এখন অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন। তাই সুস্থ হওয়া রোগীদের দেহে টি-সেল পর্যবেক্ষণ করলেন গবেষকরা।তাঁদের মত এই টি-সেলের গঠন, চরিত্র ভ্যাকসিন উৎপাদনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। সম্প্রতি এই বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে সেল রিপোর্ট মেডিসিন পত্রিকায়। যেখানে দেখান হয়েছে মানবদেহে প্রতিরক্ষা প্রদানকারী টি-সেল কীভাবে করোনা প্রতিরোধে সফল হচ্ছে।

সুইডেনের এক গবেষণার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, পূর্বের বিভিন্ন পরীক্ষায় মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যতটা প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মেছে বলে ধারণা করা হয়েছিল, বাস্তবে তার চেয়েও বেশি মানুষ সুরক্ষিত।প্রতিরক্ষা প্রদানকারী টি-সেল, যেটি করোনা প্রতিরোধে সক্ষম, সেটি আসলে কি? মানবদেহে দু’ধরনের প্রতিরোধী কোষ রয়েছে। একটি- ‘বি-সেল’। অন্যটি, টি-সেল। এই টি সেল, আমাদের দেহের বিশেষ এক ধরনের প্রতিরোধী কোষ নিয়ে তৈরি। দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) গড়ে ওঠে যে কোষগুলি দিয়ে এটি সেই কোষ বা সেল। এই কোষগুলি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্য দেহে নিজস্ব প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে গড়ে তোলে। দেহে নানা ধরনের টি-সেল থাকে। তাদের গায়ে থাকে নানা রকমের ‘রিসেপ্টর’। ভাইরাসের চরিত্র বুঝে এরা কাজ করতে শুরু করে।

এই টি সেলগুলি নিজেরা প্রোটিন কাঁধে করে নিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এগিয়ে যায়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে যেসব কোষগুলিতে ভাইরাস ঢুকে বসে থাকে সেখানে সরাসরি ঢুকে যায় টি সেল বাহিনী। রীতিমতো যুদ্ধ করেই ভাইরাস ঘায়েল করতে সক্ষম হয় সে, পরীক্ষায় এমন প্রমাণই পাওয়া গিয়েছে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় পজিটিভ আসা প্রতিটি ব্যক্তির দুটি নির্দিষ্ট টি-সেল শনাক্ত করা গেছে, যা সংক্রমিত কোষগুলো শনাক্তের পর সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। একইসঙ্গে কোভিড-১৯-এর মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গবিহীন রোগীদের ক্ষেত্রেও এ প্রবণতা দেখা গেছে। তবে এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, এসব টি-সেল কেবল আক্রান্ত ব্যক্তিকেই সুরক্ষা দেয় নাকি তার মাধ্যমে অন্যদেরও সংক্রমিত হওয়ার পথও বন্ধ করে দেয়।

Leave a Comment