বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস

আজ ১০ই সেপ্টেম্বর। আজকের দিনটির গুরুত্ব একটু অন্যরকম। কারণ আজ ‘ বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস ‘। ২০২০ সালে এসেও মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন মানুষের সংখ্যা আজও অনেক কম। শারিরীক সমস্যার জন্য প্রতিনিয়ত আমরা ডাক্তারের কাছে যাই। কিন্তু মানসিক সমস্যার কথা এলেই কেমন যেন তুরি মেরে উড়িয়ে দিই- তাই না?

এই দিনটি ২০০৩ সাল থেকে একটি সচেতনতামূলক দিন হিসাবে প্রতিবছর পালন করা হয়ে থাকে। এই দিনটি পালন করতে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সাথে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একসাথে কাজ করে। ২০১১ সালে সদর্থক ভাবে আনুমানিক ৪০ টি দেশ এই দিনটি উদযাপন করেছিলো। ২০১৪ সালে হু’এর মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি রিপোর্টে জানা যায়, নিম্ন আয়ের কোন দেশই আত্মহত্যা প্রতিরোধক কোন সচেতনতামূলক কৌশল অবলম্বন করে নি। অন্যদিকে নিম্ন মধ্য আয়ের ১০% ও উচ্চ আয়ের প্রায় সব দেশেই এই প্রতিরোধ ব্যাবস্থা সম্পর্কে সচেতন।

কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখি কেন প্রতিদিন এতোগুলো মানুষ এই সুন্দর পৃথিবী কে সহজেই বিদায় জানাচ্ছে? আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর সুইসাইড প্রিভেনশন- এর মতে, অর্ধেকের বেশি আত্মহত্যার কারণ হলো – গুরুতর হতাশা, অবসাদ। তবে বেশ কিছু মানসিক অসুখ আছে যা মানুষকে নিজের প্রান নিতে বাধ্য করে যেমন – বাইপোলার ডিসঅর্ডার, বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি। আবার যেসব মানুষ শৈশবে যৌন নির্যাতন, ধর্ষন, প্রিয় মানুষকে হারানো বা যুদ্ধের ট্রমা সহ মানসিক আঘাতের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদের সেই ট্রমা থেকেই আত্মহত্যার প্রবণতা আসে। এছাড়াও মানুষের আত্মমর্যাদা হারানো, একাডেমিক বিফলতা, শারিরীক অসুস্থতা থেকে মুক্তির আশা, গ্রেফতার হওয়ার ভয়, চাকরির ক্ষতি, ব্যাক্তিগত জীবনে প্রতারণা, সমাজে মর্যাদা হ্রাস ও অন্য নানা কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায় মনের মধ্যে।

আমরা আমাদের ব্যাস্ত জীবনে নিজের পরিবার-পরিজন,বন্ধুদের সময় দিতেই ভুলে যাচ্ছি যা আমাদের দিনে দিনে আরও একা করে দিচ্ছে, ফলে মানুষ আরও বেশি হতাশার স্বীকার হচ্ছে। আমরা আমাদের সমাজ তথা পরিবারের মানুষগুলোর পাশে যদি একটু দাঁড়াই, একটু কথা বলি, সময় দিই তাহলে এই আত্মহত্যা শব্দ টাকেই আমরা হারিয়ে দিতে পারি। আসুন তবে, সকলে মিলে আজকের দিনটিকে সঠিক অর্থে পালন করার প্রতিজ্ঞা করি। সকলের পাশে সকলে থাকার চেষ্টা করি।

Leave a Comment