বিশ্বাসঘাতক চীনের সঙ্গে ভারতের ফের সংঘাত, সীমা লঙ্ঘন চিনা সেনার

বিশ্বাসঘাতক চীনের সঙ্গে ভারতের ফের সংঘাত, সীমা লঙ্ঘন চিনা সেনার

নিজস্ব প্রতিবেদন, লাদাখ সীমান্তে চিনের সঙ্গে ফের সংঘাত, শান্তি আলোচনার মাঝেই বিশ্বাসঘাতকতা বেজিংয়ের। এ বিষয়ে ভারতীয় সেনার মুখপাত্র কর্ণেল আমান আনন্দ বলেছেন, ‘প্যাঙ্গং লেকের উত্তরে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল লাল ফৌজ। প্যাঙ্গং হ্রদের জলে তাদের হাই-স্পিড ইন্টারসেপটর বোটও ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছিল। এবার দক্ষিণ অংশ দিয়ে ভারতীয় সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে চিনের বাহিনী।’

ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর মিলেছে, গত ১৫জুন লাদাখ সংঘর্ষের পরেই প্যাঙ্গং এলাকার মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয় চিন এবং ভারতীয় সেনাদের। কিন্তু নিজেদের ছাউনি ও অস্ত্রশস্ত্র পুরোপুরি সরিয়ে নিয়ে যায় নি চিনের সেনারা, পরিবর্তে প্যাঙ্গং লেকে নতুন করে সেনা মোতায়েন করে তারা।

প্যাঙ্গং লেকের দক্ষিণে পাহাড়ি এলাকায় ফের ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়াল চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি। সূত্রের খবর, ২৯ জুলাই রাত থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল প্যাঙ্গং সো-তে। গতকাল রাতে প্যাঙ্গং হ্রদের তীরে ভারতীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় চিনের সেনা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করলেই ভারতীয় জওয়ানদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, লাদাখ সংঘর্ষের পরেই কিছুদিন আগেই ফের বৈঠক হয় ভারতীয় সেনার ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ এবং চিনের শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিনের।কিন্তু বৈঠক অনুযায়ী কোনো পদক্ষেপ নেয় নি চিন। গালওয়ানে সেনার সংখ্যা সামান্যই কমালেও, পরিবর্তে উত্তর লাদাখের দেপসাং ভ্যালিতে নতুন করে অধিক সেনা মোতায়েন শুরু করেছে চিন। প্যাঙ্গং লেকও দখল শুরু করেছে চিন।  আর একারনেই ২৯আগস্ট থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি।

ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, প্যাঙ্গং এলাকায় মুখোমুখি অবস্থান থেকে (ডিসএনগেজমেন্ট) সেনা সরাতে শুরু করে দু’পক্ষই। কিন্তু ভারতীয় জওয়ানরা বলেছেন, প্যাঙ্গং সো-তে সামান্য পিছু হটলেও নিজেদের ছাউনি ও অস্ত্রশস্ত্র পুরোপুরি সরিয়ে নিয়ে যায়নি চিনের সেনা। প্ল্যানেট ল্যাবের উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট দেখা গেছে, প্যাঙ্গং লেকের জলে চিনা বাহিনীর অন্তত ১১টি হাই স্পিড ইন্টারসেপ্টর বোট এখনও ঘোরাফেরা করছে। কয়েকটি তাঁবু, কিছু বুলডোজার ও সামরিক সরঞ্জাম সরানো হয়েছে মাত্র। ফিঙ্গার পয়েন্ট ৪-এ এখনও চিনা সেনা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। এমনকি সেনা সূত্র এও জানাচ্ছে, গালওয়ান নদী উপত্যকা বরাবর চিনা বাহিনীর সাঁজোয়া গাড়িও দাঁড়িয়ে রয়েছে এখনও। নদী উপত্যকায় তারা কংক্রিটের কালভার্ট তৈরি করেছিল। সেই পরিকাঠামো এখনও রয়েছে।

১৫ জুন সংঘাতের পরে গালওয়ান নদীর উপরে কালভার্ট তৈরি করে অস্ত্রশস্ত্র বয়ে আনা শুরু করে চিনের বাহিনী। নদী উপত্যকার আশপাশে তৈরি করে সামরিক পরিকাঠামো। অন্যদিকে, পিপি ১০, পিপি ১১, পিপি ১২ ও পিপি ১৩ পয়েন্ট রয়েছে উত্তর লাদাখে, দেপসাং সমতলভূমি বরাবর। এই পয়েন্টগুলো ভারতীয় সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন। তবে গালওয়ানের সংঘর্ষের পর থেকে এই দেপসাং ভূমিতেও ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চিনা বাহিনী।

Leave a Comment