পাশ্চাত্যের দেশগুলো প্রথম থেকেই ব্যক্তি স্বাধীনতায় একটু বেশি পরিমাণে আগ্রহী। করোনার আটকানোর জন্য লাগু করা লকডাউনে সমস্ত দেশবাসীর এই ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়েছে। তবে জার্মানির অবস্থা ইতিমধ্যেই ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কারণটা কিন্তু করোনা নয়, কারণটা সেদেশের দেশবাসী আর ঘরে আটকে থাকতে রাজি নয়। তারা দলে দলে রাস্তায় বেরিয়ে স্লোগান তুলেছেন, ভ্যাকসিন নয় স্বাধীনতা চাই।
করোনার প্রকোপে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ আমেরিকা। সেখানেই শুধু মারা গেছেন ১ লক্ষ ৯২ হাজার মানুষ। গোটা বিশ্বে এখন অব্দি মৃতের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৮১ হাজার, এহেন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সোশ্যাল ডিসটেনসিং, মাস্ক পরা ইত্যাদি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বার্লিনের রাস্তায় ঢল নেমেছে বিক্ষোভকারী মানুষদের, তাদের দাবি ” আমাদের হারানো স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও”। বিগত বেশ কয়েক মাস ধরেই এহেন বিক্ষোভ প্রায়শই চলছে আত্মার জেরেই জেরবার হচ্ছে জার্মানি।
আমেরিকায় যেখানে ট্রাম্প প্রশাসনকে বারবার দায়ী করা হচ্ছে করোনা সামলাতে না পারার জন্য সেখানে জার্মানির দাবিটা একেবারেই বিপরীত। ইতালিতে করোনা সংক্রমণ ভয়ানক হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার। লকডাউন করাকরি ভাবে পালন করা হয়, আর তার জেরেই গোটা জার্মানিতে সংক্রমণ সংখ্যা মাত্র আড়াই লক্ষ এবং মারা গিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৯ হাজার মানুষ। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের করোনা সংক্রান্ত প্রতিটি পদক্ষেপ গোটা বিশ্বে নজর কাড়লেও ধাক্কা খেয়েছে তার নিজের দেশেই। শনিবার দিন “তামারা কে” নামক এক মহিলার নেতৃত্বে হাজার হাজার মানুষের ছয়লাপ এ ভরে যায় বার্লিনের রাস্তাঘাট, পার্লামেন্ট ভবনের সামনে চলতে থাকে বিক্ষোভ, এবং ক্রমেই বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে, সোশ্যাল ডিসটেন্স তো ছেড়েই দিলাম, এদের মুখে মাস্ক অব্দি ছিল না, কাজেই ড্রপলেট এর সাহায্যে করোনা সংক্রমনের নতুন আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে জার্মানিতে।
অবশ্য বেশ কিছু জার্মানির বিশেষজ্ঞদের মতে এরকম প্রতিবাদ মিছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যেখানে অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের করোনা সংক্রান্ত পদক্ষেপ বিশ্বের প্রতিটি দেশে প্রশংসিত হয়েছে সেখানে জার্মানির বিরোধী দলের প্রধান এজেন্ডা হলো কিভাবে অ্যাঞ্জেলা মার্কেল পারলেন কোন কারন ছাড়াই এতগুলো মানুষকে ঘরবন্দি করে রাখতে। করোনা নিয়ে সরকারের বাড়াবাড়ি অসহনীয় রূপ নিয়েছে বলেই দাবি করেছে বিরোধী পার্টি গুলি। তবে করোনার মতন অতিমারি রোখার জন্য দেশের শাসক কে খলনায়কের আসনে বসানোর এই প্রচেষ্টা বিরোধী বামপন্থী পার্টির ষড়যন্ত্র বলেই মনে করা হচ্ছে।