গোটা আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে সবথেকে বেশি পর্যটক বহুল দেশ ছিল ইজিপ্ট বা মিশর। সেদেশের পিরামিড থেকে স্ফিংস, আসওয়ান থেকে লাক্সর এর কার্নাক মন্দির সর্বত্রই লেগে থাকত পর্যটকদের ভিড়, সেখানে গত তিন মাস ধরে শূন্য এই মরুভূমির দেশ। তবে এখন ধীরে ধীরে পর্যটকদের জন্য খোলা হচ্ছে ইতিহাসের এই স্বর্গরাজ্য। মাস্ক মুখে বেশ কিছু পর্যটক ভ্যালি অফ দ্য কিংস এর প্রাচীনত্বের আস্বাদ নিতে পারছেন। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের থেকে সেফ ট্যুরিজম ডেস্টিনেশন হিসেবে ছাড়পত্র পেয়েছে কেপটাউন।
করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাবে তড়িঘড়ি সীমান্ত বন্ধ করেছিল আফ্রিকার বহু দেশ। গোটা মহাদেশটিরই প্রধান ব্যবসা পর্যটন শিল্প, ঐতিহাসিক নিদর্শন যেরকম পিরামিড, কার্নাক এর মন্দির ইত্যাদি ছাড়াও সে দেশে রয়েছে পৃথিবীর সবথেকে বড় দুটি অভয়ারণ্য, সেরেঙ্গেটি এবং মাসাইমারা। তাই পর্যটক এর অভাবে এই স্থান গুলোর সাথে জড়িয়ে থাকা দেশগুলির আমদানি যে একেবারে শূন্যেতে ঠেকেছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই, তবে আফ্রিকা এর আগেও করোনার থেকে ভয়ানক ইবোলা, এইচআইভি এবং টিভির মতন মহামারীর সাথে লড়াই করেছে সমান তালে।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর মতে আফ্রিকাতে সংক্রমণের হার অনেক কমেছে, গত চার সপ্তাহে সংক্রমণের হার কমেছে ১৭ শতাংশ, যেটি একটি ইতিবাচক দিক। তবে হু এর আফ্রিকার প্রধান মাতসিডিশও ময়েতি জানিয়েছেন, সংক্রমণ কমলেও দৈনন্দিন জীবনের কড়াকড়ি এখনো তোলা যাবেনা। ইতিমধ্যেই করোনায় রিইনফেকশনের খবর বিশ্বের বহু প্রান্ত থেকে এসেছে।
সংক্রমনের দিক থেকে আফ্রিকার দেশ গুলির মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে সাউথ আফ্রিকা যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লক্ষ কুড়ি হাজার এবং গোটা বিশ্বের সংক্রমনের হিসেবের নিরিখে আফ্রিকার মহাদেশে সাউথ আফ্রিকা একমাত্র দেশ যেটি প্রথম দশে রয়েছে। এছাড়া ৩১তম স্থানে রয়েছে মিশর এবং নাইজেরিয়া রয়েছে ৫০এ।
এদিকে উগান্ডা, রাওয়ানডা, মরোক্ক এবং তিউনিসিয়া তে সংক্রমণ বেড়েছে। কিন্তু সেই দিক থেকে কেনিয়া, সোমালিয়াএবং মিসরের মতন দেশে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে করোনা আবহে স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে আফ্রিকার বেশকিছু পিছিয়ে পড়া দেশে বাচ্চাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেদেশের স্কুলপড়ুয়াদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রযুক্তির সাহায্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না।