চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে, মঙ্গলবার এস্ট্রোজেনেকা ফার্মাসিউটিক্যালস এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনার ভ্যাকসিন চাডক্স-১ -এর পরীক্ষণমূলক ট্রায়াল হঠাৎ করে বন্ধ করা হয়েছিল। এস্ট্রোজেনেকার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে তাদের একজন স্বেচ্ছাসেবকের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর একটি অজানা অসুখ ধরা পড়ে তাই সাবধানতা অবলম্বনের জন্য তারা ভ্যাকসিনের পরীক্ষা স্থগিত করেছিল। তবে চারদিন পরীক্ষা বন্ধ রাখার পর আবার চালু করা হোলো পরীক্ষা।
ওই স্বেচ্ছাসেবকের কি সমস্যা হয়েছে তাই নিয়ে এস্ট্রোজেনেকা মুখ না খুললেও একটি সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে স্বেচ্ছাসেবক টির “ট্রান্সভার্স মায়োলিটিস ” হয়েছে, এই রোগের ফলে স্নায়ুতে প্রদাহ এবং স্নায়বিক কারণে কিছু জ্বালা যন্ত্রণা হয়।
এস্ট্রোজেনেকার সিইও পাস্কাল সারিঅট বলেন “চলতি বছরের শেষের দিকে বা আসছে বছরের শুরুতে আমরা গোটা বিশ্বের হাতে চাডক্স কে তুলে দিতে পারব”।
অক্সফোর্ড তাদের বিবৃতিতে জানায় যে এত বড় একটা তৃতীয় পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালে এই ধরনের ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক এবং সেই কারণেই তারা এই ঘটনার পর সাবধানতা অবলম্বনের জন্য সমস্ত ট্রায়াল স্থগিত করেছিল, তবে এখন আবার ট্রায়াল শুরু করতে কোন ক্ষতি নেই, বৃটেনের “মেডিসিন হেলথ রেগুলেটরী অথরিটি” তাদেরকে ট্রায়াল চালু করার অনুমতি দিয়েছে।
এস্ট্রোজেনেকার পক্ষ থেকে জানান হয়েছে যে নির্দিষ্ট মূল্যায়ণ বিধি মাথায় রেখেই পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছিল, ভ্যাকসিনের পার্শ প্রতিক্রিয়ার জন্য কোনো ক্ষতি হচ্ছে কিনা সেটাও দেখা হয়েছে এবং সমস্ত কিছু মূল্যায়ণ করার পরই আবার নতুন করে ট্রায়াল শুরু করা হয়েছে।
করোনার ভ্যাকসিনে তাড়াহুড়ো করা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তা প্রকাশ করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন, তাদের মতে এটি একটি অতিমারি, তাই এই ভ্যাকসিন নিয়ে তাড়াহুড়ো করলে এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সম্প্রতি রাশিয়া এবং চীন, তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করার আগেই তাদের ভ্যাকসিন বাজারে নিয়ে এসেছে, এই নিয়ে বিশেষজ্ঞরা যথেষ্ট চিন্তিত। তাদের মতে ভ্যাকসিন একবার বাজারে চলে আসার পর যদি তাতে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ধরা পড়ে তাহলে সেটা মারাত্মক আকার নিতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসভায় একটি বিশেষ প্রস্তাব পাস করা হয় যাতে বলা হয়েছে বিশ্বের এই চরম বিপদের দিনে প্রতিটি দেশ পরস্পরকে সাহায্য করবে এবং এই কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দেবে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন। রাষ্ট্রপুঞ্জের ১৯৩ টি সদস্য দেশের মধ্যে ভারতসহ ১৬৯ টি দেশ এই প্রস্তাবে সমর্থন করলেও বিরোধিতা করে আমেরিকা, তাদের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিতে চীনের পক্ষপাতিত্ব করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন।